VoiceBharat News 1636334439 raj1

পুলিশ যেমন সমাজবদ্ধ মানুষের নিরাপত্তা রক্ষী, তেমনি আইনের রক্ষকও বটে। অপরাধীকে চিহ্নিত করে, আটক করে, আইনত শাস্তির আওতায় আনাই তার কাজ। কিন্তু এমনটা করতে গিয়ে কখনো কখনো পুলিশের ইউনিফর্মের ক্ষমতা ব্যবহার করে প্রবল আক্রোশে অমানবিক আচরণও করে বসেন অনেকে। সম্প্রতি এক্সাইড মোড়ে এমনই এক ঘটনা ঘটতে দেখা গেল।


পুলিশ নয়, পুলিশের সহকারি গ্রীন পুলিশ বা সিভিক পুলিশ ভলান্টিয়ার। ছিনতাইবাজ সন্দেহে এক রোগা পাতলা যুবককে ধরে ফুটপাতে শুইয়ে বুটপরা পায়ে এলোপাথারি লাথি মারছিলেন সবুজ উর্রিধারী তন্ময়। বুকে পিঠে লাথির চোটে রোগা ছেলেটা ঘায়েল হলেও নিজেকে ছাড়াতে চাইছিল। আর ততই বুট পরা পা চেপে ধরছিল তার গলা বুক। জনৈক ব্যক্তি এক্সাইড মোড়ের প্রকাশ্য রাস্তায় এই ঘটনা ঘটতে দেখে ভিডিও করে নেটমাধ্যমে আপলোড করে ছড়িয়ে দেন। আর সেটা দেখার পরই শোরগোল পড়ে যায়।

VoiceBharat News IMG 20211108 175000

নেটিজেনদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে কলকাতা পুলিশ। পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র স্বয়ং বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছেন। ওইসময় এক্সাইড মোড়ে ডিউটিরত ট্রাফিক অফিসারদের কাছে জবাবদিহি করেছেন তিনি। সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, “আমি ঘটনাটি দেখে বিব্রত! অত্যন্ত দুঃখিত। রাতেই ওই সিভিক পুলিশ ভলান্টিয়ারকে বরখাস্ত করা হয়েছে”।


সাউথ ট্রাফিক গার্ডদের সাথেই ছিনতাইবাজ সন্দেহে ওই ছেলেটিকে ধরেছিলেন পুলিশ ভলান্টিয়ার তন্ময়। তারপর অতি তৎপরতা দেখিয়ে পুরো দায়িত্বটাই নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন। যেভাবে তিনি ছেলেটির বুকে বুট পরা পা তুলে ঘষছিলেন সেটা হিন্দি সিনেমায় দেখানো অত্যাচারি পুলিশকেও হার মানায়।

VoiceBharat News 1636343283 civic

তাঁদের দাবি, একটি চলন্ত বাসে মহিলার ব্যাগ হাতাবার চেষ্টা করতে গিয়ে ধরা পড়েছিল ছেলেটা, তারপর চলন্ত বাস থেকে নেমে পালাচ্ছিল। উত্তেজিত জনতার হাত থেকে ছেলেটিকে টেনে এনে পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে যেভাবে নিজেই তার বিচার করতে আইন হাতে তুলে নির্যাতন শুরু করেছিলেন যা দেখে উপস্থিত সকল পথচারিই থমকে যান!


তন্ময় জানিয়েছেন, “সেইসময় ওই যুবককে সামলানো যাচ্ছিলনা। নেশাগ্রস্ত ছিল, আর গায়ে ভীষণ জোর। তাই বাধ্য হয়েই কোনোরকমে বুকে পা দিয়ে আটকে রাখতে হয়েছিল”। যদিও ধৃত ব্যক্তিকে দেখে তন্ময়ের বয়ানের সাথে একেবারেই মেলানো যাচ্ছিলনা।


বাসে ছিনতাই করা একটি মোবাইল এবং মহিলার ব্যাগ তাদের ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ডিউটিতে থাকা ট্রাফিক গার্ড। তারপরেও এই পাশবিক আচরণ কেন? যাতে যুবকটির প্রাণ যেতে পারত! প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন সভাপতি অশোক গাঙ্গুলি বলেছেন ,”কাউকে ধরতে গিয়ে ধ্বস্তাধস্তি হতে পারে, কিন্তু পুলিশের এই নিষ্ঠুরতা বেআইনি এবং অমানবিক। ভিডিওটি তোলা হয়েছিল বলেই পুলিশের এই আচরণ প্রকাশ্যে এল”।

By Partha Roy Chowdhury (কিঞ্জল রায়চৌধুরী)

Partha Roy Chowdhury (Bengali: কিঞ্জল রায়চৌধুরী) is staff journalist VoiceBharat News. email: kinjol@voicebharat.com