মোদী বিরোধিতাই যদি একমাত্র লক্ষ্য হয়, তবে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ এস টি হাসান সেই প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে এগিয়ে। কেননা, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধ বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে এই রাজনৈতিক ব্যক্তি ‘শিশু ও নারী কল্যাণ’ বিভাগের চিন্তাভাবনাকেও টক্কর দিয়েছেন। মেয়েদের বিয়ে ১৬ বছরেই দিয়ে দেওয়া উচিত, এটাই সাংসদ এস টি হাসানের মত।
সংসদে কেন্দ্রের প্রস্তাব অনুযায়ী একটি কমিটি গঠন করে নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক। সম্প্রতি সেই কমিটিরই রিপোর্ট অনুসারে মেয়েদের বিয়ের ন্যুনতম বয়স ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর করা হয়। এর ফলে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে নারীরের অবস্থান আরও উন্নত হতে পারে বলেই অনেকে মনে করছেন।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই বয়ান রেখে চলেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতৃবৃন্দ। সাংসদ শফিকুর-এর পর একই ধারায় বয়ান পেশ করলেন সাংসদ এস টি হাসান। তাঁর মতে সন্তান প্রসবের ক্ষমতা তৈরি হলেই মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া অবশ্য কর্তব্য। নাহলে তারা পর্ন দেখতে শুরু করবে! এই ধারণা তুলে ধরতে গিয়ে এস টি হাসান বলেছেন , “মেয়েদের প্রজননের আয়ু ১৬-১৭ বছর থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত থাকে। বিয়ে দিতে দেরি হলে অনেক ক্ষতি। একটি ক্ষতি হল সন্তান না হওয়ার সম্ভাবনা। দ্বিতীয়ত, কেউ যদি বুড়ো হয়ে যায় তাহলে বাচ্চাদের সঠিকভাবে লালন পালন করা যায়না।”
সমাজবাদী পার্টির সাংসদ এসটি হাসানের বক্তব্য রাখার ধরন দেখে সচেতন মহলের অনেকেই মনে করতে পারেন, কোন যুগে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন, সে সম্পর্কে হয়তো তাঁর নিজেরই হুঁশ নেই। আজকের একটি মেয়ে যখন উপযুক্ত সুযোগ পেলে তার সামগ্রিক শিক্ষা সম্পূর্ণ করে চাকরি তো করছেই, এমনকি সামাজিক প্রতিষ্ঠাও অর্জন করছে। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে এই সাংসদ ‘পুত্রার্থে ক্রিয়তে ভার্যা’ শ্লোক আউড়ে বলছেন, “আপনি যখন জীবনের শেষ দশকে পৌঁছবেন, তখন দেখবেন আপনার সন্তানরা পড়ুয়াই রয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রাকৃতিক নিয়মকে ভেঙে দিচ্ছি।”
১৯৭৮ সালে মেয়েদের বিয়ের বয়স বাড়িয়ে ১৮ বছর করা হয়েছিল। তার এত বছর পর, বহু চেষ্টায় সেই বয়স ২১ বছর করা হল, সামাজিক ক্ষেত্রে যা অত্যন্ত জরুরি মনে করছেন অনেকেই, সেখানে দাঁড়িয়ে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বলার জন্য, একজন সাংসদ এগোনোর বদলে ক্রমশ পিছিয়ে গিয়ে বলছেন, ‘১৮ নয় মেয়েদের প্রজনন ক্ষমতা ১৬ বছরে তৈরি হয়ে গেলে ১৬ বছরেই বিয়ে দেওয়া উচিত!’
নির্লজ্জ মোদী বিরোধিতা আর কাকে বলে?