সম্প্রতি বাংলাদেশের অশান্তির ঘটনা কেন্দ্র করে নিজের বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। সংবাদ মাধ্যমে স্বচ্ছভাবে ঘটনার পূর্বাপর বর্ণনা দিয়ে তিনি জানিয়েছেন “সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনায় একটিও মন্দির ধ্বংস হয়নি”।
বাংলাদেশ সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে ছড়ানো হয়েছে বলেই দাবি করেছেন ড. মোমেন।
অপরপক্ষে, বিদেশমন্ত্রীর এই বিবৃতি অস্বীকার করে প্রতিবাদ জানিয়েছে ইসকন কর্তৃপক্ষ এবং আরএসএস।
ইসকনের মুখপাত্র বেনুবিজয় দাস বলেছেন, “সকলেই দেখেছে কীভাবে মন্দির ভাঙা হয়েছে। বিদেশমন্ত্রীর বিবৃতি মিথ্যে”। আরএসএসের দাবি এটা হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর বাংলাদেশের পরিকল্পিত আক্রমণ।
প্রসঙ্গত, দুর্গাপূজো চলাকালীন কুমিল্লায় হনুমান মূর্তির পায়ে কোরান রাখা ও দুর্গামূর্তি ভাঙচুরের ঘটনায় অশান্তি চরমে উঠেছিল। ইসকন মন্দিরে হামলা ও একজনকে খুনের অভিযোগও ওঠে। যে অশান্তির আঁচ এপার বাংলা অবধি ছড়ায়। অবশ্য সাথে সাথেই দোষীদের শাস্তি দেওয়ার লক্ষ তৎপর হয় শেখ হাসিনা সরকার ও প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রী হাসিনাও সংখ্যালঘু হিন্দুদের পাশে থেকে সুবিচারের আশ্বাস দেন এবং বারবারই বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা মনে করিয়ে সরকার পক্ষ থেকে স্বচ্ছ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছিল।
গতকাল সেই হিংসাত্মক ঘটনার অনুপুঙ্খ তথ্য তুলে ধরে বিদেশমন্ত্রী ‘মন্দির ধ্বংসের’ আরোপিত অভিযোগ উড়িয়ে দেন। তাঁর বিবৃতিতে আরও জানান, “যে ৬ জন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে তার মধ্যে ৪ জনই মুসলমান , পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ফলে ওই মৃত্যু। আর যে ২ জন হিন্দু মারা গেছেন, তার মধ্যে একজন পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ হারান”। ঘটনায় ধর্ষণ বা নারী নির্যাতনের যে অভিযোগ আরোপ করা হচ্ছিল তা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত বলে উড়িয়ে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী।
পাশাপাশি মূর্তি ভাংচুর ও বাড়িঘরে আগুন লাগানোর ঘটনা সত্য বলেই মেনে নিয়েছেন। ড. আবদুল মোমেন বলেছেন, “এই হিংসা দুর্ভাগ্যজনক। এমন হওয়া উচিত ছিলনা। দোষীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এবং যে ২০ টি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছিল, সরকার তা পুনর্নির্মাণ করে দিয়েছে”।
বাংলা দেশে দুর্গাপূজোর মান্যতা কতখানি সেটাও একইসঙ্গে উল্লেখ করে ড. আবদুল মোমেন বলেন, “গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে পূজোমন্ডপের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। সরকার প্রতিটি পূজো কমিটিকে অর্থ সাহায্যও করে”।