সোমবার তৃণমূলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে প্রাথমিক ভাবে তৈরি হয়ে গেল জাতীয় রাজনীতির খসড়া নকশা। আসন্ন দিনগুলিতে সারাদেশে বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার প্রস্তুতি হিসেবে দলীয় সংবিধানের পরিবর্তনের কথাও এই আলোচনায় উঠে আসে। জোটপ্রসঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্বই বাড়ছে ক্রমশ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে বলেছেন, একাধিক সুযোগ পেয়েও বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে কংগ্রেস বারবারই ব্যর্থ প্রতিপন্ন হয়েছে। তাই দেশে শক্তি বৃদ্ধিতে আঞ্চলিক দলগুলিকে সমর্থনের ওপরেই জোর দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস।
উপস্থিত সকল উচ্চপদস্থ নেতাদের সমর্থন নিয়ে তৃণমূলের দলীয় সংবিধান পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রথমত, এর পর থেকে দলের জরুরি নীতি নির্ধারন করতে সমস্ত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক দিল্লীতে আয়োজন করা হবে। এর ফলে দলের সমস্ত কার্যক্রমই সর্বভারতীয় রূপ পাবে। দ্বিতীয়ত, দলের সমস্তরকম সিদ্ধান্তে তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন বাধ্যতামূলক হবে।
সমগ্র বৈঠকেই প্রাধান্য পেয়েছে বিজেপি বিরোধী জোটে কংগ্রেসের ভূমিকার প্রসঙ্গ। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত বক্সী, সৌগত রায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মুকুল রায় প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ভোট পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর, তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিজেপির প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী যশোবন্ত সিনহা, মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা, হরিয়ানা প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি অশোক তানওয়ার প্রমুখ আঞ্চলিক স্তরের বিভিন্ন রাজনৈতিক মুখ, যাঁরা সদ্যই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন।
প্রত্যেকেই একবাক্যে কংগ্রেসকে গুরুত্বহীন এবং তৃণমূলকেই একমাত্র বিজেপি বিরোধী শক্তি বলে চিহ্নিত করেছেন। এদিনের রাজনৈতিক সভায় দলের মতে সবচেয়ে সেরা উক্তিটি করেছেন ‘তিপ্রা মথা’-র প্রদ্যোত ঘনিষ্ঠ নেতা অশোক তানওয়ার। তিনি বলেছেন, “কংগ্রেসের মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওর হয়েছে”।
পাশাপাশি মুকুল সাংমা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সারা ভারতের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। বরিষ্ঠ নেতা সৌগত রায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ভবিষ্যত প্রধানমন্ত্রী বলে একরকম ঘোষণাই করে বসেন।