টলিনায়ক তথা বিজেপি বিধায়ক হিরণের নিজের এলাকাতেই হোর্ডিংয়ে ছবি নেই, বদলে দিলীপ ঘোষের ছবি। আর এই নিয়েই কটাক্ষ করলেন হিরণ।
প্রথমে যদিও সরাসরি ভাঙেননি টলিনায়ক। অভিনয়ের কায়দাতেই বলেছেন, “আমি হোর্ডিং পোস্টারে নেই,আমি মানুষের জন্য মানুষের সাথে কাজ করে চলেছি। “
তাই বলে নিজেরই বিধানসভা এলাকায় ছবি থেকে বাদ? প্রশ্ন তুলে টিপ্পনী কেটেছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আর তখনই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেলেছেন অভিনেতা। প্রকাশ পেয়ে গেছে তাঁর সাথে দিলীপ ঘোষের সংঘাতের কথাও।
বিজেপির গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে এবার দিলীপ ঘোষ বনাম হিরণ। যদিও খড়গপুরে এই সংঘাত বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল। যার জেরে প্রাজ্ঞ নেতা দিলীপ ঘোষের সঙ্গে হাতাহাতি পর্যন্ত বেধে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল।
এবার আবারো গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খড়গপুরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে হিরণ চট্টোপাধ্যায় কম্বল বিতরণ করছিলেন। যার দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেত্রী তৃষা চাকলাদার। তিনি অভিযোগ করে জানান, বিজেপির উত্তর মন্ডলের সভাপতি দীপসেনা ঘোষ সেই সময়ে ফোন মারফত অনুষ্ঠান বন্ধ করার হুমকি দেন। হিরণ ও বিজেপির অন্যান্য সদস্যরা হুমকির তোয়াক্কা নে করেই নিজেদের কর্মসূচি চালিয়ে গেছিলেন। কিন্তু হিরণ অনুষ্ঠান সেরে চলে যাবার পরেই তৃষা ও অন্যান্য কর্মীদের আক্রমণ করে করে মারধোর চালায় বিজেপি কর্মীরা। পুলিশে এফআইআরের সময় তৃষা জানিয়েছেন তাঁকে কুপ্রস্তাব পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল। নিজেরই দলের লাগাতার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অস্বস্তি বাড়ছে বিজেপির। তবে এখানেই থেমে যাননি তাঁরা।
এর ঠিক পরেই ঘটল হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের ছবি উধাও কান্ড। তাঁরই বিধানসভা এলাকার হোর্ডিংয়ে দেখা গেল তাঁর ছবি নেই, বদলে বিশাল বড় করে দিলীপ ঘোষের ছবি।
এই এলাকায় বিজেপির নতুন সহ সভাপতিকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রচুর হোর্ডিং টাঙানো হয়। সেসব হোর্ডিংয়ে সেন্টার পয়েন্টে দিলীপ ঘোষের সাথে সুকান্ত, শুভেন্দু, সৌমেন মহাপাত্র থাকলেও — দেখা দিলনা হিরণের ছবি।
ক্ষোভ উগরে দিয়ে হিরণ বলেছেন, “আমি মানুষের জন্য কাজ করি। নিজের ছবি লাগাইনা নিজে। এ বিষয়ে সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী , কৈলাশ বিজয়বর্গীয় এমনকি দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাকেও জানানো হয়েছে। দলের সংবিধান মেনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, দরকার হলে শাস্তিও দেওয়া হবে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। “
তবে হিরণ অভিযোগ ও শাস্তির কথা বললেও দিলীপ ঘোষ নিজস্ব ভঙ্গীতেই সেসব কথা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি উল্টে বলেছেন, “যে যার মতো করে ফটো লাগাতে পারে। কে কোথায় ফটো লাগায় আমি জানিনা। যে এইসব কথা বলছে সে আমাদের পার্টির কালচার সম্পর্কে কিছু জানেনা। আমাদের দলে কোনও অনুগামী হয়না। নীতি আদর্শের ভিত্তিতে কাজ হয়।”
অভিনেতা বিধায়ক হিরণকে কি তবে নীতি আদর্শের বাইরে ঠেলে দিলেন দিলীপ ঘোষ? সেই প্রশ্নই উঠেছে। সেই প্রশ্নই তুলেছেন হিরো হিরণের ‘অনুগামীরা’।