সনাতন শাস্ত্রীয় আইনবিধির সংশোধনের পদক্ষেপ নিতে চলেছে বাংলাদেশ। আধুনিক সময়কালের নিরিখে এই পরিবর্তন জরুরি বলেই মনে করছেন সচেতন মহলের একাংশ, তেমনই প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ।
বাংলাদেশের প্রচলিত হিন্দু আইনে কন্যা সন্তানরা বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত। এই বঞ্চনা রুখতেই আইনে রদবদল ঘটাতে চাইছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট মানুষজন। পুত্রসন্তানের পাশাপাশি কন্যারাও যাতে সম অধিকার পায়, সেই মর্মেই প্রস্তাবনা আনা হচ্ছে। কমিশনে তার একটি লিখিত আবেদনও জানানো হয়েছে। কিন্তু এই প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে বেঁকে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ।
এই সংগঠনের দাবি অনুযায়ী এই সনাতন শাস্ত্রীয় আইন পরিবর্তনের পেছনে বড় ষড়যন্ত্র কাজ করছে, যদিও ষড়যন্ত্রটি কী, সেটা তারা ব্যাখ্যা করতে পারেননি। শুধুই উল্লেখ করছেন এই শাস্ত্রীয় আইন পরিবর্তিত হলে ‘হিন্দু পরিবার বরবাদ হয়ে যাবে!’ আর সেকারণেই ঢাকার রাজপথে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করেছে হিন্দু পরিষদ।
এবিষয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাজন কুমার মিশ্র বলেছেন, “হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে অবিবাহিত কন্যা বাবার সম্পদের এক তৃতীয়াংশ ভাগ পান। বিয়ে হয়ে গেলে মেয়েদের গোত্র পরিবর্তন হয়ে যায়। তাছাড়া এমনিতেই বিয়ের সময় মেয়েকে বাপের বাড়ি থেকে অনেককিছু দেওয়া হয়। তাছাড়া গোত্রান্তরের ফলে মেয়েরা স্বামীর সম্পত্তির উত্তরাধিকার পান।”
কার্যত এই যুক্তিতেই মেয়েদের প্রতি অসাম্য জিইয়ে রাখার পক্ষেই কথা বলছে বাংলাদেশের হিন্দু পরিষদ। যেটা কাম্য নয় বলেই মনে করছেন বিশিষ্ট মহলের একাংশ, তাঁরা এই সনাতনী আইনের পরিবর্তন চান।
সাম্প্রতিক এক মামলাকে কেন্দ্র করেই বিষয়টি সবার নজরে উঠে এসেছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি বনানীর অধিবাসী অশোক দাশগুপ্তের মেয়ে অনন্যা বাবার মৃত্যুর পর সম্পত্তির দাবি করে আদালতে একটি মামলা করেছেন। এই মামলা থেকেই খোদ বিচারক প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কন্যাকে বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার এই প্রচলিত আইন কেন অসাংবিধানিক রূপে গণ্য করা হচ্ছেনা?’ সেই প্রশ্নেই আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি উঠে এসেছে। মামলার রায়দানও যেকারণে স্থগিত রাখা হয়েছে।