VoiceBharat News IMG 20220501 094002

জল ছাড়াও একটি মাছ বেঁচে থাকতে পারে। শুনতে অবাক লাগলেও ব্যাপারটা সত্যি এবং এই বিরল প্রজাতির মাছ সম্প্রতি জালে ধরা পড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায়। সাপের মতো ত্বকবিশিষ্ট এই মাছকে প্রাণী বিশেযজ্ঞরা নাম দিয়েছেন ‘স্নেকহেড ফিস।’
জর্জিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে —যদি কারুর জালে ভুল করেও একটি  ‘স্নেকহেড’ ধরা পড়ে যায়, এটিকে ছাড়বেন না। পাওয়ামাত্রই এটিকে হত্যা করুন। মনে রাখবেন, এটি ডাঙাতেও বেঁচে থাকতে পারে।”

VoiceBharat News 109267297 5296d782 17b7 45c6 88e3 ced073232b00.png


চ্যাপ্টা মাথা আর সাপের মতো দেখতে চকচকে ছাল বিশিষ্ট মাছটি মূলত মাংসাশী ও দুর্দান্ত শিকারি। তেমনই এর অশেষ খিদে। রাক্ষুসে বলে পরিচিত এই মাছ অন্য মাছ তো বটেই, এমনকি জলের অন্যান্য ছোট প্রাণী, ব্যাঙ, কাঁকড়া সবকিছু খেয়ে হজম করে দিতে পারে।

স্নেকহেড ফিস লম্বায় ৩ ফুট পর্যন্ত দীর্ঘ   হতে পারে,  ওজন প্রায় ১৮ পাউন্ড। জল ছাড়াই ডাঙায় শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ে এই মাছটি দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে। যার ফলে এক অঞ্চলের জলাশয় থেকে উঠে অন্য জলাশয়েও স্থান পরিবর্তন করতে সক্ষম এই স্নেকহেড ফিস। তেমনই এদের বংশবিস্তারের ক্ষমতাও প্রচুর। একটি নারী স্নেকহেড ফিস  বছরে দশ হাজারেরও বেশি ডিম দিতে পারে।
স্নেকহেড মাছটি চীন, রাশিয়া ও কোরিয়াতেই বেশি দেখা যায়। তবে বছর দশেক আগে আমেরিকায় এই মাছটিকে প্রথম দেখা যায়। পরবর্তীকালে ফ্লোরিডা, নিউ ইয়র্ক, ভার্জিনিয়া, ক্যালিফোর্নিয়া, ম্যাসাচুসেটস ও মেরিল্যান্ডে স্নেকহেড ফিস দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি আবারো জর্জিয়ায় একে দেখতে পাওয়া গেল।

VoiceBharat News 109267296 d6840396 97dc 4acd 994b 6a84be7399a3.png
আমরা বরাবরই জানি ‘শিকড় ছাড়া যেমন গাছ বাঁচেনা, তেমনি জল ছাড়া মাছ বাঁচেনা।’ তাহলে এর ব্যতিক্রম সম্ভব হয় কীকরে? এর বৈজ্ঞানিক  ব্যাখ্যা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মার্টিন জেনার।

তিনি জানান, “এশিয়াতে, তাদের নিজস্ব প্রাকৃতিক পরিমণ্ডলে এই মাছটি সাধারণত কম অক্সিজেনপূর্ণ পরিবেশে যেমন ধানক্ষেতে বা জলে অর্ধেক জলে ডোবা বনাঞ্চলে থাকে। কিন্তু সেখানেও এই স্নেকহেড মাছগুলো জলের থেকে উঠে এসে কিছু বাতাস বুকে ভরে নিয়ে অক্সিজেন চেম্বার তৈরি করে রাখে এবং জলের গভীর তলানিতে নেমে সেখানে প্রয়োজন হলে তারা তাদের দেহের চেম্বারে জমানো অক্সিজেন ব্যবহার করে।”

মি. জেনার আরো জানান, ” ধীরে ধীরে স্নেকহেড ফিস  ডাঙাতেও চলাফেরা করার সক্ষমতা অর্জন করেছে। এই কাজটি স্নেকহেড  সুকৌশলে করে থাকে। মাছগুলো পাখনা ব্যাবহার করে বুকে ভর দিয়ে এগিয়ে চলে। কিন্তু জলের বাইরেও একটা সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য তারা বেঁচে থাকতে পারে কারণ শরীরে তৈরি ওই গ্যাস চেম্বার। তারা ঢোক গেলার মাধ্যমে বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে  পরে সেই অক্সিজেনকেই শ্বাসপ্রশ্বাসের কাজে ব্যবহার করতে পারে।”

By Partha Roy Chowdhury (কিঞ্জল রায়চৌধুরী)

Partha Roy Chowdhury (Bengali: কিঞ্জল রায়চৌধুরী) is staff journalist VoiceBharat News. email: kinjol@voicebharat.com