পূজো এসেছে, ভিড় বাড়ছে। এই তো সুযোগ। সেই সুযোগেই রবিবার বিজেপি থেকে তৃণমূলে সরে পড়লেন বনগাঁর বাগদা ব্লকের পঞ্চায়েত প্রধান অনামিকা বিশ্বাস। এবার পঞ্চায়েতটাই না তৃণমূলের দখলে চলে যায়!
বাগদার কনিয়ারা ২ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত প্রধান এই বিজেপি নেত্রী বনগাঁ নিউমার্কেটের কাছে শ্রমিক ভবনে রীতিমতো ঘোষণা করে তৃণমূল যোগ দিলেন এবং প্রবল আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা দিলেন তিনি একা নন, আরও অন্যান্য পঞ্চায়েত সদস্যরাও আসছেন।
অনামিকা অবশ্য দাবি করেছেন এই দলবদলের পেছনে তাঁর ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই। তৃণমূলে যোগ দিয়েই তিনি প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, “দিদির উন্নয়নের জোয়ারে আমিও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই, তাই তো দলবদল করলাম”। অর্থাৎ তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জীকেই উন্নয়নের কান্ডারি বলে মনে করছেন এই দলছুট বিজেপি নেত্রী।
বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাগদার কনিয়ারা ২ ব্লকের মোট ১৫ টি আসনে বিজেপি ৯ টি আসন পেয়েছিল। সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় পঞ্চায়েত গেছিল বিজেপিরই হাতের মুঠায়। এবারকার অপ্রত্যাশিত এই দল ভাঙনে তাই সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিজেপি।
অঞ্চলের বিজেপি নেতা শিবদাস মন্ডল তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, “বিজেপি বৃহত্তর দল। তবে শাসক দল আমাদের কর্মীদের জোর করে ভাঙিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পঞ্চায়েত বিজেপির হাতেই থাকবে। তৃণমূল যা করছে ভবিষ্যতে তার ফল ভালো হবেনা”।
পঞ্চায়েত বিজেপির দখলেই থাকবে বলে যতই দলের মনোবল বাড়িয়ে আশ্বাস দিন বিজেপি নেতা, বাস্তবে তিনিও মনে করছেন পঞ্চায়েত হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। কেননা পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরাই অনামিকা বিশ্বাসের দলে। অনামিকা জোর গলায় দাবি করেছেন, “বিজেপির সব সদস্যই তৃণমূলে যোগ দেবেন। আমার সাথে কথা হয়ে গেছে। এখন থেকে আমি তৃণমূল নেত্রী হিসেবেই কাজ করব।”
অনামিকাকে সমর্থন জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী আলোরানি সরকার। বলেছেন, “অনামিকা বিশ্বাস বিজেপিতে ছিলেন। আজ তৃণমূলে যোগ দিলেন। এরপর সকলেই চলে আসবে। আমাদের সাথে কথা হয়ে গেছে”।
পঞ্চায়েত সদস্য সহ এক ঝাঁক নেতা ও কর্মী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে চলে এলে পঞ্চায়েতটাও যে তৃণমূলই কব্জা করে নেবে তাতে আর আশ্চর্য কী! অনামিকা বিশ্বাসের দলের বিশ্বাস ভাঙাকে মোটেই ভালো চোখে দেখছেননা স্থানীয় বিজেপি শিবির। কিন্তু তৃণমূলের ব্যাপক সাফল্যের এই মূহুর্তে দলছুট কর্মীদের আটকাতে তারা অপারগ, রাজনৈতিক মহল এমনটাই মনে করছেন।