‘জলি এলএলবি’ সিনেমাটা মনে আছে নিশ্চয়ই! একজন তরুন আইনজীবী কীভাবে আচমকাই জনপ্রিয় হয়ে গেলেন! এই মূহুর্তে যিনি শাহরুখ পুত্র আরিয়ানের হয়ে লড়ছেন, মুম্বইয়ের সেই প্রখ্যাত আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডের প্রথম জীবনের সাথে ‘জলি এলএলবি’ সিনেমার কিছুটা হলেও মিল পাবেন। তফাৎ এই — সিনেমার ঘটনায় ফুটপাতে গাড়ি তুলে মানুষ মেরে দিলে জলি ফুটপাতবাসীর হয়ে লড়েন, আর সতীশ মানশিন্ডে ঠিক উল্টো, ফুটপাতে গাড়ি তুলে দিলে ইনি সলমন খানের পক্ষে সওয়াল করে বিখ্যাত হন।
সলমন খান শুধু নয়, সঞ্জয় দত্ত থেকে আজকের রিয়া, আরিয়ান সহ এক সে এক সেলিব্রিটির ত্রাতা এই সতীশ মানশিন্ডে নিজেও এখন সেলিব্রিটি প্রায়। দশ বছর আগেই তাঁর পারিশ্রমিক ছিল ১০ লক্ষ্য টাকা। এখনকার হিসেব না করাই ভালো।
কেরিয়ারের শুরু ১৯৮৩ সালে। মুম্বইয়ের তৎকালীন বিখ্যাত আইনজীবী রাম জেঠমালানির অধীনে কাজ শুরু করেন। এরপর টানা দশ বছর স্ট্রাগল। ১৯৯৩ সালে মুম্বই বিস্ফোরণ মামলাই আচমকা সতীশের ভাগ্যের চাকা রুপোলি পর্দার অভিমুখে ঘুরিয়ে দেয়।
মুম্বই বিস্ফোরণ মামলায় জড়িয়েছিল সঞ্জয় দত্তের নাম। এই সতীশ মানশিন্ডেই সঞ্জয়ের কেস লড়েছিলেন। সতীশের সওয়াল জবাবের জোরেই সে মামলায় সঞ্জয় দত্ত জামিন পান। ব্যস, আর ফিরে তাকাতে হয়নি। রাতারাতি তিনিও হয়ে যান তারকা আইনজীবী।
সলমন খান জঙ্গলে দুষ্প্রাপ্য কৃষ্ণসার হরিণ মেরে আইনবিরুদ্ধ কাজ করে ফাঁসলেন, সতীশ মানশিন্ডে এসে রক্ষা করলেন সলমনকে। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ফুটপাতে গাড়ি তুলে দিলেন তারকা, কুছ পরোয়া নেহি। সতীশ মানশিন্ডে (জলি এলএলবি নন) তাঁর ক্ষুরধার যুক্তিতর্কে শেষমেশ জামিন পেলেন মাসলম্যান খান।
নৈতিকতার মানদন্ডে কে ভুল কে ঠিক তার বিচার এই প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য নয়। আইনজীবী হিসেবে তাঁর যে জুড়ি নেই, একথা অনস্বীকার্য। তাছাড়া দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় বলিউডকে ইনিই ভালো চেনেন।
তাই সেই জমানা থেকে আজ অবধি সতীশ মান্ডেই বলিউড তারকাদের ভরসা। উল্লেখ্য, সুশান্ত সিং রাজপুতের রহস্যজনক মৃত্যুতে সন্দেহভাজন রিয়া চক্রবর্তীর পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন ইনিই। এখন শাহরুখ পুত্রকে বাঁচাতেও এই আইনজীবীই ভরসা। যদিও আজ জামিন পেলেননা আরিয়ান। কালকের দিকে তাকিয়ে বলিউডের সবাই।
রাখে সতীশ তো মারে কে!