ঠিক যেন সেই আশির দশকের টলিউডি সিনেমা!
রাজনীতিতে দেয়াল দখল, জমি দখল, সিট দখল লেগেই থাকে। তবে এই হাইভোল্টেজ তৃণমূল বনাম বিজেপি লড়াইয়ে এবার যোগ হল পূজো দখল, সেটাও আবার ‘অধিকারী গড় ‘এ।
পূর্বমেদিনীপুরের কাঁথি ওই নামেই পরিচিত। আর সেখানেই শুভেন্দু অধিকারীদের পূজোর মাঠ দখল করে বসলেন গণপতি বাপ্পা। এর পেছনে মদত দিয়েছে তৃণমূল।
কাঁথিতে ২০০৭ সাল থেকে প্রভাত কুমার কলেজের সামনে একটি জমিতে প্রতিবছর একটি ক্লাব দূর্গাপূজো করে আসছে । ওই ক্লাবের প্রেসিডেন্ট শুভেন্দু অধিকারী। বিভিন্ন পদে সৌমেন্দু এবং দিব্যেন্দু অধিকারীও ছিলেন। দূর্গাপূজোর সাথে প্রতিবার বস্ত্রমেলাও হত।
এবার পূজোর মন্ডপ নির্মাণ চলাকালীন সেই মাঠেই গণেশ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তৃণমূল ঘনিষ্ঠরা। ওই মাঠেই গণেশ পূজো করছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, চলবে একমাস ধরে বস্ত্রমেলাও।
স্বাভাবিক ভাবেই অসুবিধায় পড়েছে শুভেন্দুদের দূর্গাপূজো। ‘অধিকারী পরিবারের দূর্গাপূজোকে প্যাঁচে ফেলতেই যে হঠাৎ জাঁকজমক করে গণেশ পূজোর আয়োজন তা পরিস্কার বুঝতে পারছেন শুভেন্দু ও তাঁর ক্লাব।
এই গণেশ পূজোর মূল উদ্যোক্তা তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরির ছেলে সুপ্রকাশ গিরি।
বৃহস্পতিবার গণেশ পূজো মন্ডপ উদ্বোধন করেছেন ‘টলিমূল ‘ তারকা সোহম ও কৌশানী। ‘অধিকারী’দের দূর্গামন্ডপের সামনেই মাঠ অধিকার করে ধূমধাম সহযোগে শুরু হয়েছে গণেশ পূজো।
প্রচ্ছন্ন ভাবে আসলে এ যে তৃণমূল – বিজেপি লড়াই তা আর বুঝতে কারুর বাকি নেই।
দূর্গাপূজোর আয়োজকদের তরফে বিজেপি নেতা সৌমেন্দু অধিকারী কাঁচুমাচু মুখ করে বলেছেন,” প্রত্যেক বার আমরা কেন্দ্র ও প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এই মাঠে দূর্গাপূজো করে আসছি। হাতে সময় খুব কম। গণেশ পূজোর প্যান্ডেল তাড়াতাড়ি খোলা না হলে সমস্যা দেখা দেবে”।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই শুভেন্দুর পরিবারের সাথে তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরির দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। তারপর ডিসেম্বরে শুভেন্দু বিভীষণের মতো ‘রামের দলে ‘ গিয়ে যোগ দেওয়ার পর থেকে বিবাদ আরও চরমে ওঠে। যার ফলশ্রুতি এই গণেশপূজো।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সুপ্রকাশ গিরি অবশ্য ইনোসেন্ট ভাবে হাত উল্টে দিয়ে বলেছেন,” আমরাও অনুমতি নিয়েই পূজো করছি। এক মাঠে তো একটার বেশি পূজো হতেই পারে। এতে তো সমস্যার কিছু নেই!”
হ্যাঁ, আইনের স্ক্রু দিয়েই অধিকারীদের টাইট দিতে চাইছে তৃণমূল।
ফলে বিজেপি যতই ক্ষুব্ধ হোক, সদ্য তৃণমূলে যোগ দিয়ে গণেশ বেশ জাঁকিয়েই বসেছেন।