চঞ্চল চৌধুরী। বাংলাদেশের সিনেমা ও মঞ্চ জগতে নামটা আগে থাকতেই যথেষ্ট পরিচিত ছিল। ‘তাকদীর’ ওয়েব সিরিজের সূত্রে পশ্চিমবঙ্গের সিনেমা প্রেমীদের মনেও পাকাপাকি ভাবে আসন তৈরি করে নিয়েছেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত এই অভিনেতা। এবার দুর্গাপূজো ২০২১ এর রাস্তায় ছয়লাপ ‘হইচই অরিজিনাল সিরিজ’-এর হোর্ডিংয়ে স্বমহীমায় দেখতে পাওয়া যাচ্ছে ‘তাকদীর’ খ্যাত চঞ্চল চৌধুরীকে।
এর আগেও চঞ্চল অবশ্য টলিউডে কাজ করেছেন। ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনায় গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘মনের মানুষ’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা লালন শাহ -র জীবন নির্ভর উপন্যাস অবলম্বনে ছবিটি হয়।
যদিও বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চলকে এই বঙ্গে ব্যাপক পরিচিতি এনে দিয়েছে যে ছবি তার নাম ‘তাকদীর’। এছাড়াও ২০২১ সালে মুক্তি পেয়েছে আরও একটি সিরিজ ‘ডার্করুম’।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ‘হইচই’-তে গত বছর অর্থাৎ ২০২০ তে মুক্তি পায় চঞ্চল অভিনীত সামাজিক ক্রাইম থ্রিলার ওয়েব সিরিজ ‘তাকদীর’। ইতিমধ্যেই সিরিজটা দেখেছেন অনেকেই, যারা দেখেননি তাদের মধ্যেও দিনে দিনে আগ্রহ সঞ্চার করছে এই অসামান্য থ্রিলার সিরিজ। সাথে সাথে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের এই সুপারস্টারকে ঘিরে।
মাটির গন্ধ বুকে নিয়ে জন্মে আকাশ ছুঁয়েছেন এই অসামান্য অভিনেতা। পাবনা জেলার নাজির গঞ্জের কামারহাট গ্রামে জন্ম। প্রাথমিক পড়াশোনা গ্রামের স্কুলেই, এরপর রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলাবিভাগে গ্র্যাজুয়েশন।
গান বাজনায় বরাবর ভালো ছিলেন। ‘আরণ্যক ‘ নাট্যদলের মঞ্চেই প্রথম অভিনয় জীবনের হাতেখড়ি। মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর বিখ্যাত নাটক ‘তালপাতার সেপাই’ নাটকের মধ্যে দিয়ে প্রথম পরিচিতি, এই সময় থেকে টেলিভিশনেও কাজ শুরু করেন চঞ্চল চৌধুরী। ২০০৬ সালে প্রথম তাঁকে বড়পর্দায় দেখা যায় তৌকির আহমেদের পরিচালনায় ‘রূপকথার গল্প’ সিনেমায়। ব্যস আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
২০ বছরের অভিনয় জীবনে নানাভাবে নিজেকে ভাঙচুর করেছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। শুরতে মূলত কৌতুক ও হাস্যরসাত্মক অভিনয়ে পরিচিত চঞ্চল কীকরে আজকের ‘তাকদীর’ বা ‘ডার্করুম’-এর চরিত্র রূপায়ন করলেন তা মেলাতে গেলে সত্যিই অবাক লাগবে!
২০১০ সালে ‘মনপুরা’ ছবির জন্য এবং ২০১৬ তে ‘আয়নাবাজি’ সিনেমায় শ্রেষ্ঠ অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার পান। এছাড়াও নাটক ও টিভিশোয়ের জন্য একাধিক অ্যাওয়ার্ডের পেয়েছেন ‘বাংলার অভিনেতা’ চঞ্চল চৌধুরী।
হ্যাঁ, পূর্ব ও পশ্চিমের ব্যবধানে আর এই অভিনেতাকে বাঁধা যাবেনা। চলতি বছরের সিনেদুনিয়ায় কলকাতায় ও পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপক পরিচিতি চঞ্চল চৌধুরীকে ‘বাংলার অভিনেতা’ বলেই চিনিয়ে দিচ্ছে। বদলাচ্ছে বাংলা সিনেমার দর্শকদের রুচি। রোম্যান্টিক স্টিরিওটাইপ নারকোচিত গতে বাঁধা ইমেজের যুগ আর নেই। আর ঠিক এখানেই নিজেকে ভেঙেচুরে গড়ে তুলেছেন এই চরিত্রাভিনেতা।
‘তাকদীর’ যারা দেখেছেন তারা সেটা সহজেই বুঝবেন। যারা দেখেননি, আর দেরি না করে দেখে নিন! চঞ্চলকে নিয়ে ‘হইচই'(hoichoi)-তে আপনারাও সামিল হন, তাড়াতাড়ি!