গতকাল শুক্রবার থেকে নিউ দিল্লীতে শুরু হয়েছে সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। বর্তমান পার্টিলাইন ও ভবিষ্যতের রণনীতি নির্ধারণ নিয়েই এবারের জরুরি বৈঠক। তবে সব আলোচনার মধ্যেই ঢুকে পড়ছে কংগ্রেস প্রসঙ্গ।
বামেদের কেরল শাখা কংগ্রেসের সাথে জোটের তীব্র বিরোধী। প্রকাশ কারাট ও পিনারাই বিজয়নরা বলেছেন এই জোট বিফল। তাঁদের মতে আদৌ এই জোটে বামেদের কোনো লাভ হয়নি উল্টে লোকসান হয়েছে।
অপরপক্ষে বিমান বসু সহ বাংলার অন্যান্য বাম নেতৃত্ব বলছেন দক্ষিণ ভারতের সাথে এখানকার পরিস্থিতির তুলনা করলে চলবেনা। সাময়িক ভাবে হলেও বঙ্গে কংগ্রেসের সাথে জোট বাঁধার প্রয়োজন আছে।
কিন্তু ২০২১এর বিধানসভা নির্বাচনের পরাজয়ের পর সম্পূর্ণ উল্টো গান গাইছেন কেন্দ্রীয় বাম সংগঠন। উল্টে যেটুকু অস্তিত্ব বজায় ছিল কংগ্রেসের সাথে যাওয়ার কারণে সেই আসনও নষ্ট হয়েছে — এমনই মত কেন্দ্রীয় কমিটির। আর এখানেই চুপ করে যেতে হচ্ছে বিমান বসুদের।
আসলে বঙ্গ রাজনীতির মানচিত্রে জটিলতা অনেক। বরাবরই বাংলার বামেদের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা তৃণমূল। তার ওপর রয়েছে বিজেপি। ঠিক যেন ‘গোদের ওপর বিযফোঁড়ার’ উদাহরণ। তাই বর্তমান খারাপ পরিস্থিতিতে বঙ্গে বামেদের লড়তে হলে কংগ্রেসের হাত ধরা প্রয়োজন। কিন্তু বাংলায় ভবানীপুরে উপনির্বাচনে কংগ্রেস যে ভূমিকা দেখিয়েছে তাতে বিমান বসুরাও জোর দিয়ে জোটের কথা বলতে পারছেননা।
ওদিকে কেন্দ্রীয় কমিটির দৃষ্টিতে কেরলের কংগ্রেস সিপিএমের বড় শত্রু, ত্রিপুরাতেও তাই। এই যখন অবস্থা তখন বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূলের হাত ধরার সম্ভাবনার কথাও প্রকাশ্যে বলে বসেছেন সীতারাম ইয়েচুরি।
আগামী লোকসভায় তাহলে কী হতে চলেছে, সেই নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। এপ্রিলে পার্টির ২৩-তম পার্টি কংগ্রেসে এই আলোচনা চূড়ান্ত রূপ নেবে। আগামী পথ চলা কংগ্রেস বিহীন নাকি সব হিসেবকে নস্যাৎ করে মমতাময়ী আঁচল ছায়াতেই মাথা বাঁচাবে কংগ্রেস , সিপিএম সহ সমস্ত বিজেপি বিরোধী দল! সেটা স্থির হবে তখনই।
তবে সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক বদলে যাওয়ার একটি ক্ষীণ সম্ভাবনা রয়েছে। সীতারাম ইয়েচুরির বদলে হয়তো অন্য কেউ আসতে পারেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ তাই মনে করছেন।