প্রথম দিনের গোয়া সফরেই চমক। নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেস অর্থাৎ টিএমসির নতুন নামকরণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আপনি যদি জেনে থাকেন TMC ফর তৃণমূল কংগ্রেস তাহলে আপনি তার একটা দিকের মানে জেনেছেন। এবার গোয়ার সভামঞ্চে দাঁড়িয়েই এই নামের বৃহত্তর অর্থের ব্যাখ্যা দিয়ে তৃণমূল নেত্রী বললেন, “টিএমসি মানে টেম্পল, মস্ক, চার্চ — অর্থাৎ মন্দির, মসজিদ, গীর্জা”।
ভারতের নেত্রী হবার লক্ষ্যে সেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তাকেই তুলে ধরছেন বঙ্গনেত্রী। অর্থাৎ বিজেপি যদি হিন্দুরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এজেন্ডা তুলে ধরে, তাহলে তৃণমূল নেত্রী সর্বধর্ম সমন্বয়ের রাস্তাতেই হাঁটবেন। গোয়ায় এই বার্তাই ছড়িয়ে দিয়ে বললেন “আমি দুর্গাপূজো করি, গণেশ চতুর্থী পালন করি। আবার রমজানেও থাকি। ২৪ ডিসেম্বর রাতে চার্চে গিয়ে প্রার্থনাও করি। তৃণমূল বিভেদের রাজনীতি করেনা। আর যারা করে তাদের সাথে সমঝোতাও করেনা”।
প্রথমদিনের বাধা পেরিয়ে আজ শুক্রবার তৃণমূলের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হল গোয়ায়। ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে মমতার লক্ষ্য ভারত জয়। সেই লক্ষ্যে অবিচল থেকেই রাজ্যের বাইরে ভিনরাজ্য ত্রিপুরা, গোয়া ও আসামকে বেছে নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ত্রিপুরায় নিজে যাননি মমতা, অভিষেক একাই সামলে নেবেন।
সেদিক থেকে দেখলে এই প্রথম ভিনরাজ্যের সভায় স্বয়ং মমতার পদার্পণ, আর সেটা ঘটল গোয়ায়। যদিও গোয়ায় তিনি আগেও এসেছেন। নিজের জনসংযোগ তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেছেন, “আমি বহিরাগত নই”।
এরপর গোয়ার নিজস্ব সরকারি ভাষা, অর্থাৎ কঙ্কনী ভাষায় বলে ওঠেন , “আমি আপনাদের বোনের মতো। ভারত যদি আমার মাতৃভূমি হয়ে থাকে, তবে বাংলাও আমার মাতৃভূমি, গোয়াও আমার মাতৃভূমি”।
নিজেদের ভাষায় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে কথা বলতে দেখে আনন্দে বিস্মিত গোয়ার মানুষ, শুনে হাততালি পড়ে যায়। নেত্রী আরও জানান, “আমি প্রথম এখানে আসছিনা। দশ বছর আগে এখানে এসেছিলাম ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। রেলমন্ত্রী হিসেবে এখানে এসেছি। মাডগাওতে, কোঙ্কন রেলের কাজে এসেছিলাম। সেফটি ডিভাইস উদ্বোধনে। আমি গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হবনা, কিন্তু গোয়ার উন্নয়নের জন্য কাজ করব “।
ক্ষমতার রাজনীতি নয়, বিভেদের রাজনীতি নয়, মমতা ব্যানার্জী আসলে সম্প্রীতির সাথে উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করতে চান — ভিনরাজ্য গোয়ার মাটিতে দাঁড়িয়ে নিজের প্রথম ভাষণে সেই সম্প্রীতির বীজই বুনে দিলেন।