হাওড়ায় আয়োজিতপ্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রোষের মুখে পড়লেন হাওড়ার বামনগাছি এলাকার তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী। এদিন প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীন বিধায়কদের সঙ্গে কথাবার্তা, মতামত বিনিময় করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাদের কাছে শুনছিলেন সমস্যা ও অভিযোগ। এভাবেই পালা আসে গৌতম চৌধুরীর। তিনি এলাকার সমস্যা নিয়ে বলতে যাওয়া মাত্রই হাত তুলে থামিয়ে দেন মমতা। প্রকাশ্যেই জিজ্ঞাসা করেন, “তুমি গৌতম চৌধুরী? তুমি রাস্তায় বসে পড়েছিলে কেন?”
বিধায়ক বোঝাতে চান এলাকার জল জমার সমস্যার সাথেই ধর্না দেওয়ার ঘটনাটা জড়িত। সেটাই তিনি বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাখতে চলেছেন। কিন্তু তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও কথাই তাঁকে বলতে দেননি। উল্টে গৌতম চৌধুরীকে শাসিয়ে বলেন, “জল জমে গিয়েছিল বলে তুমি রাস্তায় বসে পড়বে? প্রকৃতি কি আমাদের হাতে?”
উল্লেখ্য, গত অক্টোবর মাসের টানা বৃষ্টিতে হাওড়ার অধিকাংশ এলাকাই জলে ডুবে যায়। ভয়াবহ পরিস্থিতিতে নর্দমা পানীয় জলের কল একাকার হয়ে যায়। এর জন্য তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী তৃণমূলের পৌরসভার নতুন প্রশাসনিক লোকজনকেই সরাসরি দায়ী করেন এবং জল জমা রাস্তাতেই স্থানীয় মানুষের সাথে ধর্নায় বসে যান।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই বিধায়কের আচরণের তীব্র নিন্দা করে মমতা বলেন, “গত ৮০ বছরে এত বৃষ্টি হয়নি। সহযোগিতা করার বদলে তুমি রাস্তায় বসে গেলে?” মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, “খবরদার এগুলো কোরোনা। তৃণমূলের একটা কালচার রয়েছে। দরকার হলে জলটা নিজে সরাতে চেষ্টা করবে”।
এদিন মমতার ক্ষুব্ধ বক্তব্যের জেরে এলাকার দীর্ঘদিনের জমা জলের সমস্যা নিয়ে আর কিছু বলতে পারেননি বিধায়ক গৌতম চৌধুরী। হাওড়ার এলাকা সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে মমতা নিজেই বলতে থাকেন, “হাওড়ার জল নিকাশের জন্য ৩ ধাপে কাজ করা হচ্ছে। ৭০ বছরে যা কেউ করেনি। প্রথম ধাপের কাজ শেষ। দ্বিতীয় ধাপের কাজ শুরু হয়েছে”।
হাওড়া নিকাশিব্যবস্থার কাজ নিয়ে ৩ ধাপের কথা জানিয়ে গৌতম চৌধুরীর উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, “চাই, চাই, চাইনা! আমি কী দিতে পারি সেটা দেখাতে হবে। জনগণের সব করে দিয়েছি, কিচ্ছু বাকি নেই। এবার কেউ বঞ্চিত হলে সেটা দেখার দায়িত্ব তোমার”।
জনগণের সব করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী , এভাবেই প্রকাশ্যে সেকথা ঘোষণা করে দলীয় বিধায়কের ‘প্রতিবাদ’-কে এক ধমকে দমিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।