তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে এতদিন বাঁকা টিপ্পনী কাটতো বিজেপি। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ত্রিপুরার বিজেপি শিবিরেও অন্তর্গত দ্বন্দ্ব ক্রমশ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। এবার ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের আচরণের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করলেন বিজেপি বিধায়ক আশিষ দাস।
ত্রিপুরার সিভিল সার্ভিস আধিকারিক
দের আয়োজিত সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে আপত্তিকর এক মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তিনি কথাপ্রসঙ্গে বলেছেন,”পুলিশ তো জেল অবধি নিয়ে যাবে। কিন্তু সেই পুলিশ তো মুখ্যমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণে থাকে”।
মুখ্যমুন্ত্রীর এই মন্তব্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপি বিধায়ক আশিষ দাস এর বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানান। কেননা এই মন্তব্য প্রশাসন এবং আদালতের পক্ষেও অবমাননাকর।
উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় নাকি ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে, করোনা ও পূজোর কথা মাথায় রেখে সুরক্ষার কারণে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত সভা মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও সেখানে সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রথমত এই দ্বিচারিতার সমালোচনা করলেন দলের বিধায়ক আশিষ। স্পষ্টতই তিনি বলেন,”এখানে বলা হচ্ছে আইনের শাসন আছে, কিন্তু দেখা যাচ্ছে একেকজনের জন্য একেকরকম আইন। আমি কারুর পক্ষপাতিত্ব করছিনা। যেটা বাস্তব সেটা তো স্বীকার করতেই হবে!”
বিরোধীদের ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এই বিক্ষুব্ধ বিধায়ক। বলেছেন,”বাংলা আর ত্রিপুরার সম্পর্ক মা আর সন্তানের মতো। সেখানে বাংলা থেকে আসা নেতাদের ওপর একের পর এক আক্রমণ মেনে নেওয়া যায়না”।
একইসঙ্গে সিপিএমের পার্টি অফিস ভাঙার নিন্দায় সরব হয়েছেন এই বিজেপি বিধায়ক। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর ঔদাসিন্য তাকে আঘাত করেছে। ক্ষুব্ধ হয়েছে সৎ রাজনৈতিক মন। তিনি বলেছেন,”আমি সিপিএমের ঘোরতর বিরোধী, কিন্তু আইন ও গণতন্ত্র সকলের জন্য সমান”।
ব্লক আধিকারিকদের ওপর আক্রমণের ব্যাপারেও মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব সমান উনাসীন। অথচ সিভিল সার্ভিস আধিকারিকদের ওই মিটিংয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে সবাই করতালি দিচ্ছে, আদর্শ রাজনীতিক হিসেবে আশিস দাস মেনে নিতে পারছেননা। দলগত আদর্শে সাচ্চা বলেই এই বিধায়ক মনে করছেন,
“প্রধানমন্ত্রীর এসে দেখা উচিত, এখানে কী চলছে!”
কিন্তু ত্রিপুরার এই বিধায়কের কথা প্রধানমন্ত্রীর কান পর্যন্ত পৌঁছবে কি!
ইতিমধ্যেই সাধারণ নিয়মে ক্ষুব্ধ বিধায়ক আশিষ দাসকে অনেকে ‘তৃণমূল ভাবাপন্ন’ মনে করতে শুরু করে দিয়েছেন।