একবার অভিযোগ ওঠে মমতা বসে বসে জাতীয় সংগীত গেয়েছেন। আবার উল্টোদিকে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘জাতীয় সংগীতের কয়েকটি পবিত্র উক্তি বসে বসে বলেছেন।’ কোন অভিযোগটা সঠিক? তল পাচ্ছেননা বাংলার মানুষজন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মুম্বইয়ের অনুষ্ঠান মঞ্চে বসে জাতীয় সংগীত গেয়েছেন বলে অবমাননার অভিযোগ তুলেছেন মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতা প্রতীক কাপরে। পাশাপাশি বিজেপি নেতা অমিত মালব্য ট্যুইটার মারফত লিখিতভাবে বলেন, “আমাদের জাতীয় সঙ্গীতই আমাদের জাতীয় পরিচয়। এই সংগীতকে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে গেয়েছেন তা অবমাননাকর।”
মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতৃত্বের সূত্র ধরেই গতকাল আম্বেদকর ভবনে প্রতিবাদস্বরূপ মমতাকে যোগ্য জবাব দিতে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী অন্যান্য বিজেপি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। তার আগে ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর অভিযোগ জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রথমত, জাতীয় সংগীতের কয়েকটি পবিত্র উক্তি উনি বসে বসে বলেছেন , এটা অবমাননাকর। দ্বিতীয় অবমাননা , হঠাৎ মধ্যিখানেই থেমে গিয়ে জয় বাংলা, জয় মহারাষ্ট্র ইত্যাদি বলে উঠে দাঁড়ান। এটা বাংলার পক্ষে লজ্জার।”
এখন বাংলার কিছু বিদ্বজ্জনের মতে, আপামর ভারতবাসীই জাতীয় সংগীতের এই পংক্তিটি জানেন–‘পাঞ্জাব সিন্ধু গুজরাট মারাঠা দ্রাবিড় উৎকল বঙ্গ!’ তাহলে জয় বাংলা, জয় মহারাষ্ট্র বললে অসুবিধা কোথায়? বিশেষত সেটা বলতেই সম্মান দেখাতে যদি উঠে দাঁড়ানো হয়! এই প্রশ্নই রেখেছেন কেউ কেউ।
আর বসে জাতীয় সংগীত ‘গাওয়া’ নিয়ে ইতিমধ্যেই ট্যুইট করে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুনাল ঘোষ বলেছেন, “জাতীয় সংগীত নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন কুৎসা করছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী ‘জন গণ’ গাননি। গানের ভাবার্থ ধরে বিশ্লেষণ করে দেশের সংহতি, ঐক্য, ঐতিহ্য, সম্প্রীতির কথা তুলে ধরছিলেন। বিজেপি না বোঝে প্রকৃত জাতীয়বাদ, না বোঝে জাতীয় সংগীত, না বোঝে জাতীয় সংহতি।”
গাওয়া এবং বলে ব্যাখ্যা করা নিয়ে দ্বন্দ্ব একটা থেকেই যায়। হয়তো বিজেপি নেতৃত্ব ভুল ধরিয়ে দেওয়ার পর ‘জাতীয় সংগীতের’ পংক্তি উচ্চারণ করতেও দাঁড়িয়ে সম্মান জানাতে হবে। এটা নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। প্রশ্ন হল বিজেপি নেতাদের অভিযোগটা ঠিক স্বচ্ছ নয়। তাঁরা কি এটাই বোঝাতে চেয়েছেন? নাকি কুনাল ঘোষের বক্তব্যই ভিত্তিহীন?
কোনটা সঠিক! সেটাই ভাবছেন বাংলার মানুষজন।