কালীপূজোর দিন সকাল হতে না হতেই রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে জোরালো আক্রমণ করে বসলেন দিলীপ ঘোষ। প্রাক্তন রাজ্যসভাপতির দাবি, পশ্চিমবঙ্গ জঙ্গি সংগঠনগুলোর ‘শেল্টার’ হয়ে উঠছে।
এদিন সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য সরকারের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিলেন দিলীপ ঘোষ। সীমান্ত এলাকায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিএসএফের ক্ষমতা বাড়ানোর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রশংসা করলেন দিলীপবাবু। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের বিরোধীতার সমালোচনা করে বলেন, “অন্য দেশ থেকে যারা এদেশে ঢুকছে তাদের যাতে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত পিছু নিতে পারে বিএসএফ, তাই এই সিদ্ধান্ত। রাজ্য সরকার এর বিরোধীতা করছে, কারণ তারা চায়না রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বন্ধ হোক”।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুধু রাজ্য সরকার নয়, আরও এক বিরোধী দল সিপিআইএমও প্রতিবাদ জানিয়েছে। কেননা, এর মাধ্যমে কেন্দ্রের ক্ষমতাভুক্ত এলাকা বাড়ানো হয়েছে বলেই দাবি করেছে তারা।
কিন্তু সেই প্রশ্ন অগ্রাহ্য করেই রাজ্যসরকার জঙ্গি সংগঠনের আশ্রয়ে মদত দিচ্ছে এই অভিযোগ তুলে দিলীপ ঘোষ আরো বলেন, “বাংলাদেশের যত জঙ্গি-আলকায়দা-জেএমবি সবাই এসে পশ্চিমবাংলায় আশ্রয় নিচ্ছে, কারণ সরকার এদের প্রতি নরম মনোভাব দেখায়”।
প্রসঙ্গত, একদিন আগেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্তর্গত সুভাষগ্রামে এক সন্দেহজনক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ‘এনআইএ’ গোয়েন্দা সংস্থা। উক্ত ব্যক্তির সাথে জাল ভোটার ও আধার কার্ড উদ্ধার করা হয়। গোয়েন্দাদের অনুমান — এই ব্যক্তি বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘জামাত – উল – মুজাহিদীন'(জেএমবি) সদস্য।
তদন্তে জানা গেছে ধৃত ব্যক্তির নাম আব্দুল মান্নান। বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকবছর আগেই পশ্চিমবঙ্গে এসেছিল ওই ব্যক্তি।
এই সন্দেহের কথাই উল্লেখ করে রাজ্য সরকারকে ‘জঙ্গিদের মদতদাতা’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন দিলীপ ঘোষ। পাঞ্জাব থেকে এসে জঙ্গিরা নিউটাউন এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছে বলেও দিলীপ ঘোষের দাবি।
উল্লেখ্য, এর আগেও, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের দোরগোড়ায় দিলীপ ঘোষ দাবি করেছিলেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের কড়াকড়ির জেরে সারাদেশ জঙ্গিমুক্ত হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গি ধরা পড়ছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঁটাতার দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা আসছে। তার জন্যই এই বাধা। রাজ্য সরকার চায় জেএমবি জঙ্গিরা এখানে আসুক, ভয় দেখিয়ে উৎপাত করুক। তারা টিএমসিকে জেতাবে”।
এটা গত বিধানসভা নির্বাচনের আগের বক্তব্য। এদিন সুভাষগ্রামের সন্দেহভাজন ব্যক্তির উল্লেখ করে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ সেই কথাগুলোই আরো একবার ঝালিয়ে নিলেন।