শুক্রবার ছিল জুম্মা বার। আর জুম্মার নামাজের পরই তালিবানরা আফগানিস্তানে তাদের নয়া সরকার ঘোষণা করল। মার্কিন বাহিনী ২০০১ সালে আফগান আক্রমণের সময় তালিবানদের পাল্টা আক্রমণের ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করতেন মোল্লা বরাদর। বর্তমানে তিনিই স্বাধীন আফাগানিস্তান সরকারের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু এই মূহুর্তে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা কায়েমে তালিবানের প্রধান বাধা বহির্শত্রু নয়, বরং আফগানিস্তানই।
এমনিতেই আফগানিস্তান যুদ্ধবিদ্ধস্ত। অভ্যন্তরীণ বিবাদ চরমে উঠলে গৃহযুদ্ধেরও সম্ভাবনা রয়েছে। কাবুল দখলের ২০ দিন পরেও সরকার গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। দ্বন্দ্ব ছিল প্রধান কে হবেন সেই নিয়ে। শেষমেশ মোল্লা বরাদরকে প্রধান মেনে সরকার ঘোষণা করলেও বিশেষজ্ঞরা আরও কিছু সংশয়ের জায়গা লক্ষ্য করছেন।
প্রথমত জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল আফগানিস্তানে প্রায় ১৪টি জাতিগোষ্ঠী আছে। তার মধ্য অর্ধেক গোষ্ঠীই আফাগানিস্তানে তাদের স্বতন্ত্রতা বজায় রেখেছে বরাবর। এমনকি রাশিয়া বা আমেরিকার অধীনে থাকার সময়েও তারা নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে ছাড়েনি। প্রশ্ন হল তারা কেন মেন নেবে শুধুমাত্র তালিবানের একাধিপত্য?
এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নাম পঞ্জশীর। সেই ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত মরিয়া চেষ্টা চালিয়েও পঞ্জশীরে দখলি কায়েম করতে পারেনি। এবারের আফগানিস্তান দখলেও পঞ্জশীর তাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাছাড়াও তাজিক, পাশতুন, উজবেক, তুর্কমেনি, বালুচি প্রভৃতি জাতিগোষ্ঠীও সবসময়ই আফগান রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থেকেছে।
মোল্লা বরাদর নিজে পাশতুনদের প্রতিনিধি হলেও ৪২ শতাংশ পাশতুন তালিবানের বিপক্ষে। আর একদিকে তাজিক, উজবেক, তুর্কমেনি জাতিগোষ্ঠী রীতিমতো তালিবান বিরোধী।
এ অবস্থায় তালিবানরা যতই নতুন শান্তিপূর্ণ মডেল সরকার তৈরির আশ্বাস দিক, তাদের সরকার বা শাসনক্ষমতা আদৌ শান্তিপূর্ণ থাকবে কি?