হাসপাতালের খাবার নিয়ে অনেক রোগীদেরই অভিযোগ থাকে। এ বিষয়ে দ্বিমত আছে। কেউ কেউ সরব হয়ে বিষয়টি বলেন, কেউ আবার চুপচাপ মেনে নেন। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিষয়টিই সকলের নজরে এনেছে বাংলা পক্ষ দল।
বাংলা পক্ষ-র ফেসবুক পেজে কদিন আগেই একটা পোস্ট দেখা গেছে। যেখানে তাঁরা বলেছেন, “বাংলায় কোন কোন হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে রোগীর আমিষ পথ্য নিষিদ্ধ, সেটা কমেন্টে জানান। রোগের ক্ষেত্রে ডাক্তারি বিজ্ঞান ঠিক করবে পথ্য, মালিক না। বাংলা পক্ষ ব্যবস্থা নেবে”।
স্বাভাবিক ভাবেই এই পোস্ট ঘিরে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। নেট নাগরিকদের একাংশ এর পক্ষে মত দেন, আবার বিপরীত দিকে অনেকেই নানা প্রশ্ন তোলেন।
বাংলা পক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী কিছু কিছু হাসপাতালে নিরামিষ খাবার দেওয়াই বাধ্যতামূলক, এটা হওয়া অনুচিত। অনেকে এই বক্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করেছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, রোগীর স্বাস্থ্য বিবেচনা করেই ডাক্তার পথ্য নির্ধারণ করেন। নিরামিষ খাবার হলেই সেটা অপুষ্টিকর হবে এটা ভাবা ঠিক নয়।
কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বলছেন, “আমাদের হাসপাতালে রোগীদের যে খাবার দেওয়া হয় তা নিরামিষ। এক নির্দিষ্ট কমিউনিটি হাসপাতালটি চালায় সেক্ষেত্রে রান্না করে হাসপাতালের পক্ষ থেকে আমিষ খাবার দেওয়া হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু চিকিৎসকরা অনুমতি দিলে রোগীর বাড়ির লোক আমিষ খাবার এনে হাসপাতালে বসে রোগীকে খাওয়াতে পারেন। সেক্ষেত্রে কোনও আপত্তি নেই।”। এই হসপিটালও যথারীতি বাংলা পক্ষ-র ফেসবুক পোস্টের সঙ্গে দ্বিমত রেখে জানিয়েছেন “চিকিৎসকদের পরামর্শ মতোই রোগীদের পথ্য দেওয়া হয়”।
বেশিরভাগ কর্পোরেট হাসপাতাল এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। কেন এই পোস্ট? বাংলা পক্ষ-র সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট বক্তব্য রেখেছেন। সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন, “এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে প্রচুর অভিযোগ এসেছে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই দেখা গেছে অভিযোগকারী যে হাসপাতালে ভর্তি তার মালিক বাঙালি নন। হাসপাতাল চালাতে গেলে যে লাইসেন্সটা প্রয়োজন তা দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার অর্থাৎ বাংলার জনগণ। সমীক্ষা বলছে, ৯৮ শতাংশ বাঙালি আমিষ খান। কিন্তু ডাক্তারি শাস্ত্র অগ্রাহ্য করে যাঁরা নিজেদের কুসংস্কার বাঙালির ওপর চাপাচ্ছেন তারা অপরাধ করছেন। রোগীর জন্য অষুধের সঙ্গে পথ্যটাও জরুরি। এই ধরনের হাসপাতাল মালিকদের আমরা বলতে চাই — হাসপাতাল চালানো আর ভুজিয়ার দোকান চালানো এক নয়”।