তিনি রেফারি। তিনি আক্ষরিক অর্থেই ‘তৃণমূল’ স্তরের মানুষ – বরাবরই মাটির কাছাকাছি। বীরভূমের মাটিকে তৃণমূলের ঘাঁটি বানানোর কৃতিত্বও অনেকটা তাঁর। তিনি অনুব্রত মন্ডল।
যার নামটাই এখন একটা পলিটিক্যাল ব্র্যান্ড। এই মূহুর্তে বাংলা তথা ভারতীয় রাজনীতিতে ‘খেলা হবে ‘ শ্লোগানের প্রথম স্বতঃস্ফূর্ত উদগাতা। তিনি নিজে কিন্তু খেলায় রেফারি থাকতেই ভালোবাসেন। বরাবর প্রকাশ্যেই বলে এসেছেন তিনি পদ চাননা। সংগঠনই শেষ কথা। সেই অনুব্রত নিজেই নামতে চলেছেন মাঠে! শুনে আশ্চর্য রাজনৈতিক মহল। কী বললেন অনুব্রত?
অনুব্রতর সামনে ক্যামেরা, বুম ধরলে ওৎ পেতে থাকেন সাংবাদিক থেকে শুরু করে বিরুদ্ধ দল এমনকি সাধারণ জনতাও। তাঁর খই ফোটানো একেকটা সংলাপে রাতারাতি ঝড় উঠে যায়। গুগুল খুললেই তাঁর সংলাপ নিয়ে মিমের ছড়াছড়ি, বিতর্কও কিছু কম নয়। তবে সামনের লোককে তিনি যে চাকুর মতোই কথায় বিঁধতে পারেন এই ঘটনার সাক্ষী সবাই।
তৃণমূল নেতা অনুব্রতই দলের বিধায়কদের বলতে পারেন –“বাড়িতে বসে থাকার জন্য এমএলএ করা হয়নি। ঘুরতে হবে”।
বিরোধী দলনেতাকে বীরভূমে আনিয়ে “গুড় বাতাসা খাওয়ানো”, বা “চড়াম চড়াম ” ঢাক বাজানো সবেতেই বাজান অনুব্রত মন্ডল। স্টেজ কাঁপিয়ে যেদিন বলেছিলেন “এবার ভয়ঙ্কর খেলা হবে!” সেদিন কত রিখটার স্কেলে কাঁপন উঠেছিল তা এখন গোটা বাংলাই নিজের চোখে দেখছে। মহাভারতের কৃষ্ণর মতোই অস্ত্র না ধরা এই রথের সারথী নিজেই নাকি এবার যুদ্ধে নামছেন! বার্তা দিলেন তেমনটাই।
মঙ্গলকোটে থাকাকালীন সাংবাদিকদের অনুব্রত জানালেন। ,”এবার আর রেফারি করবো না। ত্রিপুরায় গিয়ে খেলবো। কর্নার থেকে গোলও দেবো”।
২০২৩ এ তৃণমূলের টার্গেট ত্রিপুরা।কুরুপক্ষ বিজেপিকে ধরাশায়ী করতে তাহলে শেষপর্যন্ত কৃষ্ণকেই অস্ত্র ধরতে হচ্ছে! তাই কি তৃণমূলের এত কনফিডেন্স?
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য নরম সুরে বলেছেন, “খেলা তো ভালো। ত্রিপুরার মানুষ খেলা দেখবে”।
শুধু ত্রিপুরা কেন বাংলার মানুষও খেলা দেখবে। খেলোয়াড় যখন অনুব্রত খেলা জমবে সন্দেহ নেই। সবার মনে এখন একটাই প্রশ্ন, বীরভূমের মতো ত্রিপুরাতেও কি ‘ভয়ঙ্কর খেলা’ হতে চলেছে?