সিঁদুরখেলা ছেলেখেলা নয়। ফেসবুক লাইভে এসে নিজের মুখে নিজেই একথা স্বীকার করে নিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি ফলাও করে ঘোষণা করে দিলেন এমন একটি কথা, যাতে বেশ ভালোরকম চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে রাজনৈতিক মহলে। তিনি এ-ও জানান ভবিষ্যতে আবার ফেসবুকে এসে এর চেয়েও বড় একটি তথ্য নিজেই ফাঁস করবেন। কী এমন বললেন শোভন? যা কিনা অপ্রত্যাশিত !
বঙ্গ রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ইদানিং বিনোদন একটা আলাদা স্থান করে নিয়েছে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। কেউ কেউ আরো এক পা এগিয়ে বলছেন, ‘Politics is bigger entertainment rather than a reality show!’ কথাটার মধ্যে নিঃসন্দেহে বক্রোক্তি আছে। সংবাদ মাধ্যমের কাছে এটি শুধু একটি উদ্ধৃতি মাত্র। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনীতিতে সমান্তরাল ভাবে ঘটে চলা কিছু ঘটনা যে রসাস্বাদনকারীদের মনোরঞ্জনের নিরন্তর যোগান দিয়ে চলেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
সম্প্রতি, শোভন-বৈশাখি প্রসঙ্গ হয়ে উঠেছে অনেকটা তেমনই। উপরন্তু এই অগ্নিতে ঘি ফেললেন শোভনপত্নী রত্না চট্টোপাধ্যায়। যেন নেপথ্যে কোন এক অদৃশ্য সুতো এসে রত্না চট্টোপাধ্যায়কে শোভন বাবুর ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী করে দিয়েছে! আর তাতেই ক্ষুব্ধ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন শোভন। তারই মধ্যে আচমকা ঘটালেন আরো এক বিস্ফোরণ!
ফেসবুক লাইভে এসে ভিডিওয় অংশগ্রহণ করে জনসমক্ষে প্রকাশ করে জানালেন , “দশমীর দিন সিঁদুরখেলা দৃশ্যমান হয়েছিল। তা আপনারা ছেলেখেলা ভাবতে পারেন। কিন্তু তার বাস্তবতার প্রমাণিত সত্য তুলে ধরার বিষয়ে আমি শপথ গ্রহণ করেছি।”
রাজনীতিতে ‘শপথগ্রহণ’ শব্দটি নিশ্চয়ই বৃহত্তর তাৎপর্য বহন করে, ঠিক তেমনই ‘দাম্পত্য’ জীবনও যুদ্ধক্ষেত্রের চেয়ে কম কিছু নয়, তার ওপর যদি তৃতীয় পক্ষ ‘দমকা হাওয়া’-র মতো ঢুকে পড়ে তাহলে আর রক্ষা নেই। সেক্ষেত্রে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব (এ মূহুর্তে প্রাক্তন) ‘শপথগ্রহণ’ শব্দটিকেই বেছে নেবেন, সেটাই স্বাভাবিক। তবে এরপর তিনি যা বললেন , সেটা শোনার জন্য অনেকেই হয়তো প্রস্তুত ছিলেন না। শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি শোভন চট্টোপাধ্যায়, শপথ নিয়ে বলছি , দুই সন্তান নয়, আমার তিন সন্তান বর্তমান। সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়, সুহানি চট্টোপাধ্যায় এবং রিলিনা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
এই কথাটি আপাতভাবে একটি সরল বাক্য। এর মধ্যে কোনও অসুবিধা নেই। তবে ঘটনাচক্রে ওই তৃতীয় নামটি বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যার নাম! সুতরাং মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। এই ভিডিওটি বৈশাখির ফেসবুক প্রোফাইল থেকেই করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর এই লাইভ দেখে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। রত্না চট্টোপাধ্যায়কে রাজনৈতিক ভাবে হারাতে না পেরেই কি এমন মানসিক চাপ সৃষ্টির পথ নিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়! রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের একাংশ তেমন মনে করতেই পারেন। তবে ভিডিও শেষে শোভন জানালেন, এখানেই শেষ নয় আরো আছে। ভবিষ্যতেই সেটা নাকি প্রকাশিত হবে!
এদিন লাইভে রত্না চট্টোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। পুরভোটে তাঁর ওয়ার্ডে প্রার্থী হওয়া নিয়েও বলতে ছাড়েননি। সবশেষে ডিভোর্সের মামলার কথা তুলে সংযোজন, “রত্না চট্টোপাধ্যায় যে চক্রান্ত যে নিম্ন রুচির পরিচয় দিয়েছেন, তা আগামী দিনে ফেসবুক লাইভ করেই সামনে আনব।”
পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহল বিপুল আগ্রহ নিয়ে ভবিষ্যতের এই ফেসবুক লাইভের অপেক্ষায় রইল বলেই খবরে জানা গেছে।