হিজাব বিতর্ক নিয়ে এবার মুখ খুললেন তৃণমূলের তরুণ মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য। কর্ণাটকের বিজেপি সরকারের সিদ্ধান্ত –শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মচিহ্নিত কোনও পোশাক পরা চলবেনা। তারই জবাব দিতে ফেসবুক লাইভে এসে মার্জিত ভাষায় নিজের বক্তব্যে জরুরি কিছু প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের তরুণ নেতা দেবাংশু।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব , বোরখা পরে আসার বিরোধিতা করছেন একদল গেরুয়া ও লাল উত্তরীয়ধারী পড়ুয়া।সে রাজ্যের বিজেপি সরকারও এই প্রসঙ্গে হিজাব নিষিদ্ধ করাকেই মান্যতা দিতে চাইছে। এর ফলে অনিচ্ছুক মুসলিম ছাত্রীরদের ধর্মীয় মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলেই একাংশের মত। এই বিতর্কেই উত্তপ্ত কর্ণাটক।
তারই মধ্যে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যায় কলেজে প্রবেশরত বোরখা পরিহিতা এক ছাত্রীকে ঘিরে ধরে ‘জয় শ্রীরাম’ বলে এক নাগাড়ে চেঁচিয়ে চলেছে এক দঙ্গল ছেলে, প্রত্যেকের গলাতেই হিন্দু ধর্মের প্রতীকী উত্তরীয় ঝোলানো। একা মেয়েটি সাহসিকতার সাথে রুখে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে তীব্র প্রতিবাদ জানান। এই ভিডিও শেয়ার হতেই চতুর্দিকে সাড়া পড়ে যায়। পক্ষে বিপক্ষে বাদানুবাদ চলছেই।
এর মধ্যেই শান্তভাবে নিরপেক্ষ জায়গা থেকে দেবাংশু বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইউনিফর্ম নির্দিষ্ট করা হয়,সকলের মধ্যে সমতা রক্ষার জন্য। ঠিক কথাই। সে হিসেবে প্রত্যেকেরই এক পোশাক পরা উচিত, এতে কোনও ভুল নেই।” এরপরেই তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, “বোরখা ধর্মীয় পোশাক তাই তাকে বাদ দেওয়ার কথা উঠেছে। বেশ তাই যদি হয়, তবে হিন্দুদের পৈতে, হাতের লাল তাগা, শিখদের পাগড়ি এসবও তো বাদ দেওয়া উচিত? তাই নয় কি?”
এই জোরালো প্রশ্ন রেখে তরুণ তৃণমূল নেতা বলেন, “কর্ণাটকের নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কাতেই বিজেপি এসব করাচ্ছে।” সাধারণ মানুষের ধর্মীয় স্পর্শকাতর জায়গায় উস্কে দিয়ে কার্যত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় রাজনীতি ঢোকাবার তীব্র নিন্দা করেন তিনি। একই সঙ্গে বলেন, “এই তো হলো ছবি! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একদল বলছে ‘জয়শ্রী রাম!’ আর একদিকে ‘আল্লাহু আকবর!’ এই যদি চলতে থাকে তাহলে এইসব প্রতিষ্ঠান থেকে ভবিষ্যতে কেউ এ.পি.জে আব্দুল কালাম তৈরি হবেনা।”
দেবাংশুর এই বক্তব্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় রাজনীতি ঢোকাবার প্রতিবাদে এক নতুন মাত্রা যোগ করল।