কাঁথিকে সবাই চেনে অধিকারী গড় নামে। কাঁথির রাজনৈতিক ভূমিতে একমাত্র অধিকারী পরিবারেরই অধিকার। এবার নিজেদের ভূমিতেই জনসাধারণের ক্ষোভের মুখে ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারী।
একদিন আগেই পুরভোটের প্রচারে বেরিয়ে মুসলিম মহল্লায় অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়েছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। ক্যামেরার সামনে বুকে জড়িয়ে ছবি তুললেও এক বৃদ্ধার সরল প্রশ্নে অস্বস্তিতে পড়েছিলেন বিরোধী দলনেতা।
বৃদ্ধার আন্তরিক প্রতিক্রিয়া ছিল, “এতদিন কোথায় চলে গেছিলেন? এখন ফিরে এসেছেন ভালো লাগছে।” এই প্রশ্নই আঙুল দিয়ে দেখায় ভোট আসার আগে পর্যন্ত দীর্ঘদিন সে মহল্লায় পা রাখেননি নেতা। আর এবার ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর ওয়ার্ডে প্রচার করতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হলেন। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে সৌমেন্দুর এলাকায় এবার প্রার্থী গোবিন্দ খাটুয়া। তাঁর হয়ে প্রচারে গিয়েই তীব্র বিক্ষোভের মুখে পড়েন শুভেন্দু।
কাঁথিতে এবার অধিকারী পরিবারের কেউ প্রার্থী না হলেও সেখানে আসলে শিশির অধিকারী এবং নিজের তৃণমূল কংগ্রেসী ইমেজকেই ভোট প্রচারে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি, স্থানীয় মানুষদের প্রতিক্রিয়া সেদিকেই ইঙ্গিত করছে। এমনকি শুভেন্দু অধিকারী নিজেমুখেই তাঁর প্রচারের শ্লোগানে উচ্চারণ করেছেন ‘দুয়ারে শুভেন্দু!’
এই শ্লোগান তৃণমূলের অতীত স্মরণ করাতেই কি ব্যবহার করছেন শুভেন্দু! এদিন কাঁথির একটি জায়গায় তৃণমূলের মিছিলের মুখমুখী পড়ে যান শুভেন্দু অধিকারী ও বিজেপির সদস্যরা। তাঁকে সামনে পেয়েই তৃণমূল শিবির থেকে মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে একনাগাড়ে উচ্চকিত শ্লোগান উঠতে থাকে যার ফলে ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “এসব কেন করছ তোমরা? একদম এসব করবেনা! সবাই নির্বাচনে প্রচার করবে।” উত্তেজনা বাড়তে দেখেই সেখানে হাজির হয় পুলিশ। কিন্তু ঘটনাচক্রে এদিন আর ভবানীপুরের পুনরাবৃত্তি ঘটেনি।
এপ্রসঙ্গে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারী তৃণমূল কর্মী রমেন দাস বলেছেন, “১০ বছর পর এই ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কথা মনে পড়ল শুভেন্দুর!এই ওয়ারর্ডের আগের কাউন্সিলর সৌমেন্দু অধিকারীকেও কোনওদিন এলাকায় দেখা যায়নি। শুভেন্দু অধিকারী তো পুরো ডুমুরের ফুল। ভোটের সময় আসতেই এলাকার কথা মনে পড়েছে!”
অবশ্য বিজেপির পক্ষ থেকে সৌমেন্দু অধিকারী পাল্টা কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শুধুই বলেছেন “আমরা ২১ নম্বর ওয়ার্ডে জিতছি।”