‘এমন গ্রামটি কোথাও খুঁজে পাবেনাকো তুমি!’ এই ভ্যালেনটাইন’স ডে-র মরসুমেও যারা সিঙ্গেল, এমন পুরুষ আহ্লাদে গদগদ হয়ে গেয়েহ উঠতে পারেন এইভাবে গান। কেননা, তাঁদের জন্যেই অপেক্ষা করছে ব্রাজিলের ছোট্ট একটি গ্রাম। যেখানে গ্রামের সমস্ত সুন্দরী তরুণীরাই অবিবাহিতা রয়ে গিয়েছেন। লাবডুব খুশী নিয়ে ব্যাচেলররাও পাত্রীর খোঁজে গিয়ে হাজির হতেই পারেন এই গ্রামে। তবে সেই মেয়েগুলো কাউকে জীবনসঙ্গী রূপে বেছে নিতে রাজি হবে কিনা সেখানেই সংশয়। কারণটা তো অবশ্যই জানা জরুরি।
সাউথ-ইস্ট ব্রাজিলের অন্তর্গত পাহাড় ঘেরা গ্রামাঞ্চলটির পোশাকি নাম নোইভা ডি কোরডোইরো। ছোট্ট গ্রামটিতে ৬০০ জনেরও বেশি মহিলার বসবাস, যাদের মধ্যে সিঙ্গল এবং অবিবাহিতার সংখ্যাই বেশি! এমনকি যত দিন যাচ্ছে, ধীরে ধীরে পুরুষ বিহীন হয়ে পড়ছে এই গ্রাম। কেননা যেক’জনের বিয়ে ইতিপূর্বে হয়েছে তাদের স্বামীরা প্রায় সারা সপ্তাহই কাজের সূত্রে বহিরাঞ্চলে থাকেন। আর রীতি অনুযায়ী ছেলেদের ১৮ পার হলেই গ্রামের বাইরে বিদায় করে দেওয়া হয়। তাহলে আর ভাব ভালোবাসা হবেই বা কার সাথে? আর তা নাহলে, নতুন সঙ্গীরই বা জন্ম হবে কেমন করে?
তাই সুন্দরী তরুণীরা অধিকাংশই একলাই দিন কাটাচ্ছেন। কেননা এই গ্রামের নিয়ম অনুযায়ী বিয়ে করলে ছেলেটিকেই এই গ্রামে এসে বসবাস করতে হবে, তাও অস্থায়ী প্রথায়। মেয়েরা কিছুতেই শ্বশুরঘরে যাবেননা। তার ফলে পার্শ্ববর্তী এলাকার পুরুষরাও রাজি হননা। কিন্তু এই অদ্ভুত রীতির পিছনে কারণটা কী?
কারণটা এই গ্রামের গোড়াপত্তনের ইতিহাসেই লুকিয়ে। এই গ্রামটি গড়েই তুলেছিলেন এক মহিলা, নাম মারিয়া সেনহোরিনা। ১৮৯০ সালে এই মেয়েকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। তারপরই তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে এই অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন করেন। তাঁরই উদ্যোগে এই গ্রাম গড়ে ওঠে। ফলে এই রীতিই মেনে চলেছেন সবাই। পণ করেছেন কেউ শ্বশুরঘরমুখো হবেননা।
কী ভাবছেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার পাশাপাশিও এমন গ্রাম থাকা সম্ভব কিনা! আছে, দিব্যি জোরের সাথে টিঁকেবর্তে আছে। আপনি চাইলে যেতেও পারেন। বিয়েটিয়ে করে সারা সপ্তাহের জন্য আবার ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যাবেন নাকি?