VoiceBharat News IMG 20220322 163635

মহাভারতের কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে বিশেষ কিছু অস্ত্রের বিবরণ রয়েছে। যার ক্ষমতাগুণ বিচার করলে সেগুলিকে নিছক তীর-ধনুক, বা গদা-বল্লম বলে মনে হয়না। আপাতদৃষ্টিতে সেগুলির চিত্রায়ন দেখে সাধারণ তীর ছোঁড়ার খেলা বলে মনে হলেও তার সংহারক ক্ষমতা এবং ১৮ দিন ব্যাপী যুদ্ধে প্রায় ১৬০ কোটি মানুষের মৃত্যু এইদিকেই ইঙ্গিত করে যে সেগুলো সাধারণ অস্ত্র ছিলনা।

VoiceBharat News IMG 20220322 162811

কোনো কোনো গবেষকের অনুমান, মহাভারতে বর্ণিত ব্রহ্মাস্ত্র, ব্রহ্মশীর্ষ বা নারায়ণী অস্ত্রই আজকের যুগের পারমাণবিক বোমা এবং হাইড্রোজেন বা থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা। এই বিষয়টি অসম্ভব মনে হলেও এমন ভাবার পিছনে কতগুলো কারণ রয়েছে।

VoiceBharat News IMG 20220322 162541
মহাভারত কত সালে রচিত হয়েছিল, তা নিয়ে বিভিন্ন গবেষকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। যদি আচার্য যোগেশচন্দ্র রায়ের দেওয়া তথ্যকে ধরা হয়, তবে খ্রীষ্টপূর্ব ১৫ শতককেই মহাভারতের রচনাকাল ধরতে হবে। তাহলে আজ থেকে আনুমানিক সময়কাল দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৩,৫০০ বছর আগে। এখন সাধারণভাবে প্রশ্ন উঠতে পারে এতবছর আগে এই ধরনের বিধ্বংসী অস্ত্রশস্ত্র কি সত্যিই আবিষ্কৃত হওয়া সম্ভব? আর যদি তা না হয়, ‘মহাভারত’ নামক ভারতের প্রাচীন মহাকাব্যে এই অস্ত্রগুলির কার্যকারিতার উল্লেখ করা হলো কীভাবে? এই উত্তরে যাওয়ার আগে স্বল্পকথায় মহাভারতে বর্ণিত অস্ত্রগুলির বর্ণনায় চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।

VoiceBharat News IMG 20220322 131158
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে পান্ডব-কৌরব যুদ্ধে সবচাইতে বিধ্বংসী যে অস্ত্রটির নাম আমরা পাই সেটার নাম ‘ব্রহ্মাস্ত্র।’ খেয়াল করলে দেখা যাবে তখনকার রণনীতিতেও উল্লেখ করা হচ্ছে এই অস্ত্র সর্বসংহারক এবং যখন খুশি ব্যবহারের অনুমতি নেই। কারণ এই অস্ত্র প্রয়োগ হলে সমূলে বিনাশ নিশ্চিত! এই বর্ণনা জেনে কী মনে হচ্ছে, আজকের পারমাণবিক বোমা, নয় কি?

VoiceBharat News IMG 20220322 162831
প্রায় এমনই বিধ্বংসী আরেকটি সমতুল্য অস্ত্রের নাম ব্রহ্মশীর্ষ। ব্রহ্মার চতুর্মুখের মতোই চারদিক থেকে নির্গত বিধ্বংসী বাণ (মিসাইল কি?) আজকের থার্মোনিউক্লিয়ার বোমার সাথে তুলনীয় মনে হতেই পারে। আরেকটি অস্ত্র নারায়ণী। স্বয়ং বিষ্ণুর নামে তৈরি এই অস্ত্র বিশেষ যোগ্য ব্যক্তি ছাড়া লাভ করতে পারবেননা। এই বিষ্ণুর বিশেষ বরলাভ করাকে রাষ্ট্রসংঘের অনুমতি-রর সাথে তুলনা করতেই পারেন কেউ।

এছাড়াও ব্রহ্মানন্দ, ব্রহ্মশির এমনকিছু অস্ত্রের প্রতিক্রিয়ায় সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে ফুটন্ত জলে পরিণত হওয়ার কথা ভাবলে আজকের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত ভ্যাকুয়াম বোমা-রর তুলনা মনে আসতেই পারে, যে অস্ত্রটি ভূপৃষ্ঠে নিক্ষেপ করলে কয়েক কিলোমিটার সংলগ্ন অঞ্চলের অক্সিজেন শোষিত করে ফেলার ক্ষমতা রাখে বলেই আজ সকলে জানতে পেরেছেন।

VoiceBharat News IMG 20220322 131228
এবার প্রশ্ন হলো আজ থেকে আনুমানিক সাড়ে ৩ হাজার বছর আগে এমন সব মারাত্মক বিধ্বংসী এবং বৈজ্ঞানিক অস্ত্র তৈরি আদৌ সম্ভব ছিল কি? এটা বিরাট বিতর্কিত এবং নিরন্তর গবেষণার বিষয়। তবে বিজ্ঞান কিন্তু কল্পনাকে স্বীকার করে।

ইতিহাস বলছে একসময়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞান যাকে প্রামাণ্য রূপে স্বীকৃতি দিয়েছে কোনও এক সময়ে সেটি কল্পনার পর্যায়েই অনুমিত ছিল। এছাড়া ভারতবর্ষের অতীত যুগে আয়ুর্বেদশাস্ত্রের প্রভূত উন্নতির পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক উন্নতির দৃষ্টান্তও অনেকে দিয়ে থাকেন। তবে বিষয়টি সত্যিই আজো নিরন্তর কৌতূহলের উদ্রেক করে চলেছে।

By Partha Roy Chowdhury (কিঞ্জল রায়চৌধুরী)

Partha Roy Chowdhury (Bengali: কিঞ্জল রায়চৌধুরী) is staff journalist VoiceBharat News. email: kinjol@voicebharat.com