পাহাড়েও ঘাসফুল। সমীকরণ রাতারাতি বদলে গেল। জিটিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিনয় তামাং শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন।
তাঁরই সাথে যোগ দিয়েছেন কার্শিয়াংয়ের এক প্রাক্তন বিধায়ক রোহিত শর্মা। এদিন তৃণমূলে যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন,”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই দুজন তৃণমূলে যোগ দিলেন। পাহাড়ের উন্নয়নই এঁদের লক্ষ্য।”
যদিও বিনয়ের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জল্পনা আগে থাকতেই শুরু হয়ে গেছিল। বিমল গুরুং বনাম বিনয় তামাং সম্পর্কের সমীকরণেও ইতিমধ্যে বদল আসতে শুরু করেছিল। নভেম্বর মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করেছিলেন বিনয় এবং গুরুংয়ের সাথে। এছাড়াও তাঁরা দুজনে সম্প্রতি একসাথে বৈঠক করেছিলেন।
দুজনের সম্পর্কও তখন থেকেই ভালো। আর সেকারনেই বিনয়ের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে পাহাড়ী রাজনীতিতে শুরু হয়ে গেছিল কানাকানি। এবার সেই জল্পনাকেই সত্যি প্রমাণ করে বিনয় তামাং তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন। যোগ দেওয়ার সাথে সাথেই বিজেপির ‘ললিপপের লোভ দেখানো রাজনীতিকেও’ একহাত নিলেন তামাং।
যোগদান অনুষ্ঠানের সভামঞ্চে বিনয় বলেন, “মমতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েই আমি তৃণমূলে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মমতাকে আমি সর্বভারতীয় নেত্রী হিসেবে দেখতে চাই, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। জাতীয় দলে যোগ দিয়ে আমি উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন করব।”
কিন্তু গোর্খাল্যান্ডের লড়াইয়ের কী হবে? প্রশ্নটা অনেকেরই মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। উত্তরটা তামাং নিজেই দিয়ে বলেছেন, “আমাদের আসল বিরোধী বিজেপিরা। বারবারই তারা আমাদের পৃথক গোর্খাল্যান্ডের ললিপপ দেখিয়েছে। দরকার নেই পৃথক গোর্খাল্যান্ডের। দরকার পাহাড়ের প্রকৃত উন্নয়ন। আমরা বুঝতে পেরেছি একমাত্র তৃণমূলের সঙ্গে থাকলেই আমাদের কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব।”
বিমল গুরুং ফিরে আসার পর পাহাড়ে তিনিই যে শেষকথা তা একরকম স্বীকার করেই কি নিলেন বিনয় তামাং! তাই নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই তৃণমূলে ফেরা! কেননা ইতিমধ্যেই বিমলের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাহাড়ের উন্নতি প্রকল্পে কাজ করবেন এমন বার্তা দুজনেই দিয়েছেন।
তবে বিনয় ও গুরুংয়ের এই হ্যান্ডশেকের ফলে লাভবান হল তৃণমূলই। বিজেপির ‘ললিপপ’ আর কোনও কাজেই লাগলনা। রাজনৈতিক মহলের একাংশ তাই মনে করছেন।