বিশ্বজুড়েই নতুন করে দেখা দিয়েছে ওমিক্রনের আতঙ্ক। আর এই আতঙ্কের বশবর্তী হয়েই গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা ঘটালেন এক চিকিৎসক। খুন করলেন নিজের স্ত্রী আর দুই সন্তানকে। মৃত্যুর পর লিখে জানালেন, ‘ওমিক্রন থেকে কারুর রেহাই নেই তাই ওদের মুক্তি দিলাম।’
খুন করার পর ওই চিকিৎসক নিজেই তাঁর ভাইকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে খবরটা জানান।
করোনার আতঙ্ক বিশ্ব জুড়ে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, বিগত অভিজ্ঞতায় আমরা সেটা দেখেছি। নিজের. প্রাণহানির সংশয় তো আছেই, পাশাপাশি চেনা অচেনা প্রিয়জনের রোগ সংক্রমণ ও মৃত্যুর বহু ঘটনার সাক্ষী হয়েছে চলমান সময়। তার ওপর দীর্ঘকালীন লকডাউন, প্রতিদিনের স্বাভাবিক জীবন থেকে দূরে সরে গিয়ে আবদ্ধ জীবনে, অনেক মানুষের ক্ষেত্রেই ঘনিয়ে এসেছিল অবসাদ।
কোভিড সংক্রমণের প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীনই বিগত দিনগুলোয় পারিপার্শ্বিক পরিবর্তন ও মৃত্যু আতঙ্কে প্রচুর বয়স্ক মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এমন ঘটনাও ঘটেছে। সবার কাছেই তো আর জীবনকে যখন খুশি যেমন ইচ্ছে ঢেলে সাজানোর সামর্থ্য থাকেনা! তাই স্বাভাবিক জীবনধারা ব্যাহত হওয়ায় বহু মানুষজন ভেঙেও পড়েছেন হতাশায়। তেমনই এক মর্মবিদারি ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে আমাদের দেখিয়ে দিল মৃত্যু আতঙ্ক মানুষকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।
খবর সূত্রে জানা গেছে, অনেকদিন ধরেই ওই চিকিৎসক তীব্র মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। আতঙ্ক আর হমাশায় নিজেকে আর সামলে রাখতে না পেরেই সম্ভবত তিনি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। নিজের হাতে গলা টিপে হত্যা করেন স্ত্রীকে। এরপর ছেলে ও মেয়েকেও মাথায় হাতুরির বারি মেরে খুন করে নিজেই সেখবর জানিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। খবর পেয়ে খুনি চিকিৎসকের ভাই গিয়ে বাড়ি থেকে ওনার স্ত্রী ও সন্তানদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেন।
তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, ওই চিকিৎসকের ঘর থেকে একটি ডায়েরি পেয়েছেন তারা। ডায়েরিতে খুনের কথা লেখা এবং আরো লেখা রয়েছে, ‘এখন থেকে আর লাশ গুনতে হবেনা। করোনা সবাইকে মারবে।’
সারি সারি মৃত্যুমিছিল নিজের চোখে দেখেই কি শেষপর্যন্ত মানসিক ভারসাম্য হারালেন ওই চিকিৎসক? নাকি খুনের পিছনে আসলে অন্য কোনো কারণ লুকিয়ে রয়েছে। তার তদন্ত করছে পুলিশ।