একেবারে চাঁচাছোলা ফিল্মি বাংলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে দেবাংশু জানালেন, “পাবলিকের মার ক্যাওড়াতলা পার”। কৃষকদের লাগাতার আন্দোলনের ফলে আজ কৃষি বিল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন নরেন্দ্র মোদী। আর তার প্রতিক্রিয়াই দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের তরুণ মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য।
দেবাংশু এদিন বাম জমানার কৃষক আন্দোলনের আরো এক পুরোনো স্মৃতিও টেনে এনে বলেন, “বামেদের ২৩৫ এর দম্ভ হোক বা নরেন্দ্র মোদীর ৩০৩ এর অহংকার, কৃষকের সামনে কোনও কিছুই টিঁকতে পারেনা। দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ কৃষিজীবী সেটা মাথায় রাখতে হবে তো!”
টানা একবছর ব্যাপী লাগাতার কৃষক আন্দোলনের ফল এদিন মিলল বলেই মনে করছেন দেবাংশু। যদিও এনডিটিভি সূত্র মারফত জানা গেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুরুনানকের জন্মদিন উপলক্ষ্যেই কৃষিবিল প্রত্যাহার করেছেন। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেছেন, “হয়তো আমাদের তপস্যায় কিছু ঘাটতি ছিল। যেকারণে আমরা কিছু কৃষককে আইনটি সম্পর্কে বোঝাতে পারিনি। কিন্তু আজ প্রকাশপর্ব। কাউকে দোষারোপের সময় এটা নয়। আজ আমরা ৩ টি কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিলাম”।
মোদীজির এই বক্তব্যে অবশ্য চিঁড়ে ভেজাতে চাননি বাংলার তৃণমূল যুবনেতা দেবাংশু। আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কারণ বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, “প্রথমত, কৃষকদের চটিয়ে কখনও ক্ষমতায় থাকা যায়না। দ্বিতীয়ত, সামনেই বেশ কিছু রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। দেশের অধিকাংশ কৃষকই পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখন্ডের বাসিন্দা। সুতরাং ভোটের আগেই আচমকা এই সিদ্ধান্ত কাকতালীয় নয় কি!”
তবু দেরিতে হলেও প্রধানমন্ত্রীর বোধোদয়কে স্বাগত জানিয়েছেন তরুণ তৃণমূল নেতা। তিনি বলেন, “কথায় আছে বেটার লেট দ্যন নেভার। এতজনের মৃত্যুর পর নরেন্দ্র মোদীর ভুল ভেঙেছে। একবছর পরে হলেও তিনি যে ভুল স্বীকার করেছেন এর জন্য ধন্যবাদ”।
ধন্যবাদ জানিয়েও বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দিতে ভোলেননি দেবাংশু। পরক্ষণেই বলেছেন, “বিজেপি যেন এটা না ভাবে এর ফলে তারা মানুষের ভোট পাবে। মানুষ বোকা নয়। ১০০ টাকার ওপরে পেট্রোলের দাম তুলে দিয়ে ৫ টাকা কমালে আর মানুষের আস্থা অর্জন করা যাবেনা “।
এভাবেই পেট্রোপণ্যের ওপর কেন্দ্রের শুল্ক কমানোও যে একরকম আইওয়াশ, সেটাই বোঝাতে চাইলেন দেবাংশু ভট্টাচার্য। তুলে এনেছেন নোটবন্দির মতো ভুল সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গও। তবে এই মূহুর্তে কৃষি বিল প্রত্যাহার করে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব হয়ে দলের কাছে যে কিছুটা হলেও মোদীজির মুখ পুড়ল তাতে সন্দেহ নেই। এটাই ধরিয়ে দিলেন দেবাংশু। বললেন, “যে বিজেপি নেতারা এতদিন কৃষিবিলকে ন্যায্য বলেছেন, তাঁদের নেতাই আজ বলছেন সিদ্ধান্ত ভুল! কৃষক সমাজকে আমার স্যালুট। এই প্রথম আন্দোলনকারীরা নরেন্দ্র মোদীকে তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে হটাতে পারলেন”।