‘চরম অব্যবস্থা গুজরাটে। না আছে ভালো থাকার বন্দোবস্ত, না আছে ভালো খাবারের ব্যবস্থা !’ এই অভিযোগ তুলে সোশ্যাল মাধ্যমে সরাসরি ক্ষোভ উগরে দিলেন ত্রিপুরার বিজেপি বিধায়ক। খোদ প্রধানমন্ত্রীর শাসিত রাজ্য গুজরাট নিয়ে বিজেপিরই বিধায়কের এই প্রকাশ্য মন্তব্যে অস্বস্তির মুখে দুই রাজ্যের বিজেপি শিবির।
ত্রিপুরার আমবাসার বিজেপি বিধায়ক পরিমল দেববর্মা সহ ৭ বিধায়ক সম্প্রতি একটি শিক্ষামূলক ভ্রমণের উদ্দেশ্যেই গুজরাট গিয়েছিলেন। আর সেখানেই অব্যবস্থাপনায় রীতিমতো অসম্মানিত ও তিতিবিরক্ত হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিমল দেববর্মা।
তিনি জানান, “আমরা ত্রিপুরা বিধানসভার এস্টিমেট কমিটির সদস্যরা গুজরাটে এসেছি। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, বলতেও খারাপ লাগছে, আমেদাবাদ পৌঁছানোর পর রাত্রিবাসের যে ব্যবস্থা করা হয়েছে তা থাকার উপযুক্ত নয়। খাওয়া দাওয়ারও ভালো ব্যবস্থা নেই!”
এই বক্তব্যে অস্বস্তিতে বিজেপি মহল। ত্রিপুরা বিজেপি সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে নিজেরাই দায় স্বীকার করে বলেন,”ওই রাজ্যের যিনি প্রোটোকল অফিসার ছিলেন তার সাথেই একটা কমিউনিকেশন গ্যাপ তৈরি হয়েছিল। যার ফলে এমন ঘটেছে। পরে আমরা যোগাযোগ করতাই সব মিটে যায়।”
ত্রিপুরা সরকারের পক্ষ থেকে সাফাই দেওয়া হলেও বিজেপি বিধায়ক পরিমল দেববর্মার এই দলবিরোধী বক্তব্যে সুযোগ পেয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরাও। এর আগেই ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধে প্রশান্তির কিশোর পরিচালিত আইপ্যাক সংস্থা অভিযোগ তুলেছিল, তাঁদের হোটেলবন্দী করে রেখেছিল ত্রিপুরার পুলিশ। পুরোনো সেই প্রসঙ্গই খুঁচিয়ে তুলেছে তৃণমূল। নিজেরাই যোগাযোগের গাফিলতির দায় স্বীকার করায় ত্রিপুরা সরকারের বিরুদ্ধেই আঙুল উঠেছে।
অপরদিকে তৃণমূলের সুরে সুর মিলিয়েও নিজের রাজ্যের সম্মান রক্ষার্থে বিশালগড়ের সিপিএম বিধায়ক ভানুলাল সাহা বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য গুজরাটেই মর্যাদাহানির শিকার হয়েছেন বিজেপি বিধায়করা। একই দলের সরকার দ্বারা পরিচালিত দুই রাজ্য। আমাদের ছোট রাজ্য ঠিকই, তবে বিধায়কদের মর্যাদা তো একই হওয়ার কথা।”
ত্রিপুরা বিধানসভার তরফে জানানো হয়, যোগাযোগ ঠিক হওয়ার পর ৭ জন অতিথি বিধায়ককে অবশেষে আমেদাবাদের সার্কিট হাউস থেকে স্থানান্তরিত করে গান্ধীনগরের একটি বেসরকারি হোটেলে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তবে ভিনরাজ্যে গিয়ে নিজেরই দলীয় সরকারের কটু সমালোচনা বিজেপি শিবিরে পারস্পরিক দ্বন্দ্বের উদাহরণ হিসেবে থেকেই গেল বলেই অধিকাংশের মত।