এইমূহুর্তে টিপকান্ড নিয়ে তুলকালাম চলছে বাংলাদেশে। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এই বঙ্গে এবং অন্যান্য দেশেও চলছে তুমুল বিতর্ক। টিপ পরার কারণে এক মহিলা শিক্ষিকাকে চরম হেনস্থা এমনকি প্রাণে মারার চেষ্টার গুরুতর অভিযোগ পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে। এই আবহেই আরো একবার প্রতিবাদী ভূমিকায় অবতীর্ণ লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
গত রবিবার শাড়ি এবং টিপ পরা বেশকিছু ছবি ফেসবুক ওয়ালে রেখে একটি পোস্ট করেন তসলিমা নাসরিন। তিনি লিখেছেন, “টিপ টিপ টিপ। মেয়েরা কতরকমভাবে সাজতে পারে। বেচারা ছেলেদের সাজগোজের বেশি কিছু নেই।…অলঙ্কার এমনকি টিপটাও পরতে পারেনা। মুসলমান পুরুষরা তো কল্পনার ঈশ্বরের উদ্দেশে কল্পনার বেহেস্তের লোভে মাথা ঠুকতে ঠুকতে কালো দাগ বানিয়ে ফেলেছে কপালে। ওটিই তাদের কালো টিপ।”
তসলিমা নাসরিনের পাশাপাশি সোশ্যাল মাধ্যমে নিজের প্রতিবাদ রেখেছেন সৃজিত মুখার্জির স্ত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। আসলে যে কান্ডটি নিয়ে তোলপাড় সেটি ঘটেছে শনিবার, ঢাকার সেজান পয়েন্ট বিল্ডিংয়ের সামনে। টিপ পরার কারণে হেনস্থার শিকার হন তেজগাঁও কলেজের শিক্ষিকা লতা সমাদ্দার। সংবাদ সূত্রে লতা সমাদ্দারের দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী, আনন্দ সিনেমা হলের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ‘টিপ পড়ছোস ক্যান..’ এই কটুক্তি ও অশালীন ভঙ্গির পুরুষ কন্ঠস্বর ভেসে আসে।
শিক্ষিকা ফিরে দেখেন একজন পুলিশের উর্দিপরা লোক বাইকে বসে এই কটূক্তি ছুঁড়েছে। ঘটনার প্রতিবাদ করায় উল্টে আরো নোংরা ভাষায় গালাগাল দিতে শুরু করে ওই পুলিশি উর্দি চাপানো লোকটি। এমনকি বাইকে স্টার্ট দিয়ে তাঁকে পিষে দেওয়ার চেষ্টা করেন যার ফলে পায়ে গুরুতর চোট লেগে জখম হন শিক্ষিকা লতা সমাদ্দার।
এরপর শের এ বাংলা নগর থানায় অভিযোগ জানান তিনি। পুলিশ তদন্তপ্রক্রিয় শুরু করেছে। পাশাপাশি সোচ্চার হয়ে উঠেছে সমাজ মাধ্যম।
তসলিমা নাসরিনের প্রতিবাদী পোস্ট ছাড়াও এপার বাংলার চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখার্জির স্ত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা নিজের কপালে টিপ ও বন্দুগ বাগানো একটি কোলাজ ছবি পোস্ট করে লেখেন, “আমার টিপ নিয়ে কোনও কথা নয়/ আমার স্বাধীনতা নিয়ে কোনও কথা নয় / যদি থাকে আমার আগুনে নিশ্চিহ্ন হবার ভয়/ পৃথিবীটা তোমার একার নয়।”
প্রতিবাদ এভাবেই লাগাতার ধ্বনিত হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শিক্ষিকা লতা সমাদ্দারও এই ঘটনার বিচার চেয়েছেন।