বিশ্ববন্দিত আমেরিকান সংস্থার ব্র্যান্ডেড ইলেক্ট্রিক গাড়ি ‘টেসলা’ এখনও ভারতের বাজারে ঢুকতে পারেনি। এই নিয়ে সুচারু ভঙ্গীতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রযুক্তি কৌশলী এলন মাস্ক। সম্প্রতি ট্যুইটারে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ‘ভারতে টেসলা গাড়ির ব্যবসা শুরু সম্পর্কে কী ভাবছেন এলন মাস্ক?’
উত্তরে টেসলা ইনকর্পোরেশনের সিইও এলন মাস্ক জানান, “এখনও অনেক চ্যালেঞ্জের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে ভারত সরকারের সঙ্গে।”
এই চ্যালেঞ্জ আসলে কিসের? সেটাই বিস্তারিত জানা প্রয়োজন। কারণ এর সাথে সম্পর্কিত ভারতের নীতি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া।’ ভারতের মোদী সরকারের এই প্রকল্পের নীতিই চ্যালেঞ্জের সম্মুখে ফেলেছে এলন মাস্ককে।
যে নরেন্দ্র মোদী শিল্পের উদ্যোগকে এতটা অগ্রাধিকার দেন; টাটার ‘ন্যানো’ গাড়ির ব্যাপারে যিনি অত্যুৎসাহী ছিলেন সেই মোদী এলন মাস্কের গাড়ি ‘টেসলা’-র কাছে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন কেন? প্রশ্নটা স্বভাবতই আসে।
এর উত্তরে যেটা জানা যাচ্ছে বাধা নয়, আসলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিদেশি প্রযুক্তির বাজারকে ভারতের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের সাথে সংযুক্ত করতে চাইছেন। ‘ন্যানো’ বিদেশি প্রকল্প ছিলনা। টাটার পুঁজি মানে দেশীয় পুঁজি। উল্লেখ্য, শুধু গাড়ি নয়, এই মূহুর্তে চীনের সাথে টেক্কা দিতে ইলেকট্রনিক্স প্রযুক্তিতে ব্যবহার্য উপাদান সেমিকন্ডাক্টার তৈরির জন্য ৭০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে সম্মত হয়েছে টাটা। এই সবটাই মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অন্তর্গত। আর এই নীতিই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে মার্কিন গাড়ি ‘টেসলা’-র কাছে।
এলন মাস্কের প্রতিক্রিয়া থেকেই বোঝা যায়, ভারতের বাজারে ‘টেসলা’-কে আনতে কতটা আগ্রহী তিনি। ২০১৯ সাল থেকেই ভারতের বাজারে ‘টেসলা’ গাড়ির ব্যবসার অনুমতি চেয়েছিলেন তিনি, এখনও পর্যন্ত তা মেলেনি। একদিকে ‘সুজুকি’, ‘হুন্ডাই’ প্রভৃতি কোম্পানি ভারতে ফ্যাক্টরির শাখা তৈরি করে চুটিয়ে ব্যবসা করছে। পাশাপাশি বুধবার ‘মার্সিডিজ বেঞ্চ’ জানিয়েছে শীঘ্রই ভারতের বাজারে আসতে চলেছে তারের ইলেকট্রিক গাড়ি ‘সিদান’। অথচ ‘টেসলা’ ভারতে নেই, এটা মেনে নিতে পারছেননা এলন মাস্ক।
কিন্তু ভারতও সিদ্ধান্তে অনড়। কেন্দ্রীয় সরকারের একটাই শর্ত — ভারতে কারখানা তৈরি করে ‘টেসলা’-র নির্মাণ করতে হবে। তবেই মিলবে অনুমতি।
এবার ভারত সরকারের এই চ্যালেঞ্জের কাছে এলন মাস্ক নতিস্বীকার করে সম্মত হন কিনা, সেটাই দেখার।