সোমবার থেকেই নিরুদ্দেশ। খোঁজ মিলছিলনা কিছুতেই। স্কুলে ক্লাস করতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি উচ্চমাধ্যমিকের ছাত্র ধ্রুবজ্যোতি বিশ্বাস। স্বেচ্ছায় পালানো! নাকি কিডন্যাপিং? তল পাচ্ছিলনা পুলিশ। তবে বাড়ির লোকজন জানান তাঁদের ছেলের ধর্মের প্রতি তীব্র ঝোঁক ছিল। মাঝেমধ্যেই সন্ন্যাসী হওয়ার কথা বলত। শেষমেশ তার হদিশ মিলল কালকা মেলে।
ব্যারাকপুর হাইস্কুলের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ধ্রুবজ্যোতি বিশ্বাস সোমবার ক্লাস করতে গিয়েই নিখোঁজ হয়ে যায়। স্কুল ছুটির সময় পেরিয়ে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে যাচ্ছে দেখেই চিন্তিত হয়ে পড়েন ধ্রুবজ্যোতির বাবা মা। থানায় ডায়েরি করে বিষয়টি জানানো হয়। এমনকি সে সন্ন্যাসী হবার কথা প্রায়শই বলত সেটাও জানানো হয়। সুতরাং পুলিশের পক্ষে খোঁজার কাজটি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
ব্যারাকপুরের ষষ্ঠীতলার অধিবাসী ধ্রুবজ্যোতির ধর্মের প্রতি ঝোঁক ছোটবেলা থেকেই। যত বড় হচ্ছিল ততই সে ঝোঁক বাড়ছিল। স্থানীয় হনুমান মন্দিরে নিয়ম করে পূজো দিতে যেত। একদিন আচমকাই ন্যাড়া হয়ে বাড়িতে আসে। বাবা মায়ের জেরার মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে সে বলে, ‘খুসকি হয়েছে তাই ন্যাড়া হয়েছি।’ তবে এর মধ্যে দিয়েই যে পালানোর ছক কষছিল ধ্রুবজ্যোতি, এতটা তার মা বাবা আন্দাজ করতে পারেননি।
পুলিশে জানানোর পাশাপাশি ধ্রুবজ্যোতির বাবা কুন্তল বিশ্বাস নিজেও খোঁজাখুঁজি শুরু করেছিলেন। সেই সূত্রেই হাওড়া স্টেশনে গিয়ে সহায়তা চান তিনি। হাওড়া স্টেশনের কর্তৃপক্ষও রাজি হয়। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ছেলেকে শনাক্ত করেন বাবা। রেলওয়ে স্টেশনে খবর ছড়িয়ে পড়ে।
অবশেষে কালকা মেলে খুঁজে পাওয়া যায় তাকে। উত্তরপ্রদেশের তুন্দলায় ধ্রুবজ্যোতিকে রেলকর্মীরা চিনতে পারেন। এরপরেই তাঁকে ফিরিয়ে আনা হয়। জানা যাচ্ছে রীতিমতো পরিকল্পনা করে সিমলা গিয়ে সন্ন্যাসী হতে চলেছিল ১৮ বছরের ছেলেটি। আগে থাকতেই রিসার্ভেশন টিকিট কেটে রেখেছিল। পরদিন থেকা স্কুলে না আসার পূর্বাভাস দিয়েছিল সহপাঠীদেরও। হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপগুলি মুছে ফেলেছিল নিজেই। তারপর স্কুল থেকে বেরিয়েই সোজা হাওড়া, কালকা মেল। ধরা পড়ে ফিরে এসে ধ্রুবজ্যোতির সন্ন্যাসী হবার প্রাথমিক চেষ্টা আপাতত ব্যর্থ হল। যদিও বাবা মা তাকে ফিরে পাওয়ায় ভীষণ খুশি।