ইউক্রেন থেকে ভারতীয় ছাত্রদের নিয়ে সেনাবাহিনীর বিমান দিল্লী পৌঁছনোমাত্রই জয়ধ্বনি উঠল ‘মোদীজি জিন্দাবাদ!’ জয়ধ্বনি দিতে দিতেই বিমানের ভেতরে ঢুকলেন প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী অজয় ভট্ট। বায়ুসেনা বিভাগের প্রাক্তন ফৌজিরা বায়ুসেনার বিমানে উঠে মন্ত্রীর এই আচরণ মোটেই সুনজরে দেখেননি।
বায়ুসেনার অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল মনমোহন বাহাদুর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “বায়ুসেনার বিমানে এসব কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায়না।” প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংকে উদ্দেশ্য করে প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট জেনারেল সতীশ দুয়ার স্পষ্ট সচেতনবার্তা দিয়েছেন, “এর পুনরাবৃত্তি যেন আর না হয়।”
আসলে ইউক্রেন থেকে ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য এবং তাকে ঘিরে বিজেপি দলের মোদী গুণকীর্তন এমনই মহিমামন্ডিত করে তুলেছেন যে নেতা মন্ত্রীরা ভুলে যাচ্ছেন সেনাবাহিনীর নিজস্ব কিছু প্রোটোকল রয়েছে। সেনাবাহিনীতে কোনো একজন বিশেষ ব্যক্তিকে পূজনীয় স্থানে বসিয়ে গুণকীর্তনের কোনও জায়গা নেই।
‘অপারেশন গঙ্গা’ -র মাধ্যমে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয় নাগরিক ও পড়ুয়াদের ফেরানোর কথা উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনী সভাতেও তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এরপরেই বিজেপির নেতামন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীকে একেবারে দেবতার স্থানে বসিয়ে শুধু পূজো করাটাই যা বাকি রেখেছেন।
ইন্ডিগো এবং এয়ার ইন্ডিয়ার কোনো বিমান পড়ুয়াদের নিয়ে দেশে ফিরলেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা দলেবলে বিমানে উপস্থিত হয়ে মোদীজির প্রচার এবং জয়ধ্বনি শুরু করে দিচ্ছেন। সেই পদ্ধতিতেই বৃহস্পতিবার একটি ফিরে আসা বিমানে উঠে প্রতিমন্ত্রী অজয় ভট্ট বলতে শুরু করে দেন, “মোদীজির কৃপাতেই জীবন বেঁচে গিয়েছে। তাঁর কৃপাতেই সব ঠিক হয়ে যাবে। নরেন্দ্র মোদী না থাকলে কী হত কিচ্ছু ঠিক নেই।”
এইসব কথা ফলাও করে উল্লেখ করে অজয় ভট্ট ‘মোদীজি জিন্দাবাদ!’ শ্লোগান তুলে চেঁচানো শুরু করে দেন। মন্ত্রীর এই আচরণেই সেনাবাহিনীর কর্তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। শিক্ষার্থীরাও শ্লোগান দিতে রীতিমতো অস্বস্তি প্রকাশ করেছে।