‘ঘরওয়াপসি’ শব্দটা এখন রাজনীতিতে চালু প্রবাদে পরিণত। তবে খুব কম রাজনীতিবিদই রয়েছেন যারা নিজের দল ছেড়ে অন্য শিবিরে যোগ দিয়ে আবার পুরোনো দলে ফিরে গিয়েছেন। সম্প্রতি এই তালিকায় শীর্ষ নাম অর্জুন সিং। পদ্ম ছেড়ে জোড়াফুলে ফিরে গিয়েছেন তিনি। এই পুরোনো দলে ফিরে যাওয়ার উপলক্ষ্যে ভাটপাড়ায় আনন্দোৎসব। কিন্তু কেন ছাড়লেন অর্জুন বিজেপি দল? উত্তর রেডিই ছিল।
‘ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে’ কারণ হিসেব অর্জুন সিং প্রথমেই পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতাদের টার্গেট করে বলেছেন, “ঠান্ডা ঘরে বসে এবং ফেসবুকে রাজনীতি হয় না।” দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার এঁরা সকলেই কি তবে ‘ঠান্ডা ঘরে বসে ফেসবুকীয় রাজনীতি’ করছেন? অর্জুনের ইঙ্গিত অনেকটা সেদিকেই।
জুটমিল এবং জুটশ্রমিকদের ইস্যু নিয়ে বিগত কিছুদিন ধরেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছিলেন অর্জুন সিং। এমনকি প্রয়োজন হলে তৃণমূলের ব্যানারেও লড়তে রাজি এমন ইঙ্গিতও প্রকাশ করেন। জল্পনা শুরু তখন থেকেই। তাহলে কি ফুল বদলাতে চলেছেন অর্জুন সিং!
সেই জল্পনাই সত্যি প্রমাণ করে গত রবিবার ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন অর্জুন সিং। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পার্থ ভৌমিক, রাজ চক্রবর্তী প্রমুখর উপস্থিতিতে যোগদান পর্ব সমাধা হয়। গলায় উত্তরীয় পরিয়ে অর্জুন সিংয়ের নতুন অভিষেক ঘটালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
দলবদল প্রসঙ্গে সাংবাদমাধ্যমের সামনেও মুখ খুলেছেন অর্জুন সিং। তিনি সাফ জানান, “যে ঘরের ছেলে ছিলাম, সেই ঘরেই ফিরেছি। মাঝখানে কিছু ভুল বোঝাবুঝিতে বিজেপিতে গিয়েছিলাম।” তারপরেই বিজেপির ‘ঠান্ডা ঘরের বিলাসিতা’ এবং ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনীতির’ উল্লেখ করে অর্জুন বলেন, “বাংলায় এভাবে কাজ হয় না। এখানে মাটিতে থেকে রাজনীতি করতে হয়।”
ওদিকে পাল্টা জবাব দিয়ে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ প্রশ্ন তুলেছেন, “আমরা ঠান্ডা ঘরে বসে রাজনীতি করলে, দুশো জন কর্মী মারা গেলেন কীভাবে? তাহলে, উনিও কি এতদিন ঠান্ডা ঘরে বসে রাজনীতি করতেন?”
সেই উত্তর অর্জুন সিংই দিতে পারেন। আপাতত বিজেপির একনিষ্ঠ সৈনিক পুরোনো দলে ফিরে যাওয়ায় বিতর্ক তুঙ্গে।