সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ যতই মাথাচাড়া দিক , ভারতের মূল সুর যে ঐক্যের, তা মাঝেমধ্যেই প্রকাশিত হয়ে পড়ে। ‘মিলনমহান’ এই ভারতেরই চিত্র সম্প্রতি ধরা পড়ল গুজরাতের বীর মহারাজ মন্দিরে।
১২০০ বছরের ঐতিহ্যসম্পন্ন গুজরাতের দলবানা গ্রামের এই মন্দির গুজরাতে যথেষ্ট বিখ্যাত। এবার সেই মন্দিরের পুরোহিতই উদ্যোগী হয়ে মুসলিমদের ইফতারের জন্য নিমন্ত্রণ জানালেন। এককথায় যা অভূতপূর্ব! কেননা এই গ্রামের বাসিন্দাদের সংখ্যাগরিষ্ঠই হিন্দু। চাষবাস ও জীবিকার সূত্রে কয়েকঘর মুসলিমের বসবাস।
সকলেই জানেন রমজান মাসে রোজা রাখার নিয়ম। সারাদিন নির্জলা উপোস করে সন্ধ্যায় কিছু ভাজাভুজি ও ফলাহার মুখে তোলেন মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা –এটাই ইফতার। বীররাজের মন্দিরের প্রধান পুরোহিত পঙ্কজ ঠাকুর স্বয়ং উদ্যোগী হয়ে মন্দির চত্বরে ইফতারের আয়োজন করে নিমন্ত্রণ পাঠান। এখানে এসে উপবাসী মুসলিমরা এককথায় আপ্লুত।
চলতি বছরে রমজানমাসেই তিথি পড়েছে রামনবমীর। দুই সম্প্রদায়ের আনুষ্ঠানিক মেলবন্ধনের ইঙ্গিত নিয়েই যেন উপস্থিত হয়েছে দুই পূণ্যতিথি। এই ব্যাপারটি লক্ষ্য করেই গ্রামপঞ্চায়েত ও মন্দিরের পুরোহিত যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেন মন্দিরে ইফতারের আয়োজন করে সারাদিন অভুক্ত মুসলিমদের আমন্ত্রিত করা হবে।
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী মন্দিরের পুরোহিত মসজিদের মৌলবী সাহেবের কাছে গিয়ে আমন্ত্রণ বার্তা দেন। এমন অভাবনীয় উদ্যোগে ভীষণ খুশি সেখানকার মুসলিমরা। মন্দিরে উপোস ভঙ্গ করে ইফতারে অংশ নিয়েছেন সকলেই। গ্রামবাসীদের একজন জানান, “এই গ্রামে হিন্দু-মুসলিম ভাইভাইয়ের মতোই বসবাস করে। তবে এমন উদ্যোগ আগে কখনো দেখা যায়নি।” স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা খুশি। পাশাপাশি পঞ্চায়েত প্রধানের বক্তব্য, “হোলি বা রামনবমীতে মুসলিম ভাইরাও তো এগিয়ে আসেন। হিন্দুদের কতরকম কাজে সহায়তা করেন। তাই এবার মুসলিমদের অনুষ্ঠানেও এগিয়ে এসেছেন হিন্দুরা।” পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, “এই গ্রামের সম্প্রীতি গোটা দেশের কাছেই দৃষ্টান্ত হয়ে উঠুক।”