দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ রোখবার জন্য চমকপ্রদ প্রযুক্তি আনলো ভারতীয় রেল। ইতিমধ্যে এই উন্নত প্রযুক্তির পরীক্ষা নিরীক্ষাও সফলভাবে উত্তীর্ণ রয়েছে। শুক্রবার রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের উপস্থিতিতেই এই পরীক্ষা করা হয়। নতুন এই সুরক্ষা ব্যবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ‘কবচ’।
এটি ভারতের একেবারে স্বনির্ভর সুরক্ষা ব্যবস্থা। ২০১২ সাল থেকে এই প্রযুক্তি প্রয়োগের জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছিল। প্রথমে নামকরণ করা হয়েছিল টিসিএএস, পরে তা পাল্টে কবচ নাম দেওয়া হয়। এই বিশেষ প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য হলো — ইঞ্জিনের সাথে ইলেকট্রনিক্স এবং রেডিওফ্রিকোয়েন্সি চিহ্নিতকারী যন্ত্র সংযুক্ত থাকে। তেমনই সিগন্যাল এবং রেললাইনের সাথেও সংযোগ রক্ষা করছে যন্ত্রাংশ। একটার থেকে আরেকটায় সিগন্যাল পাসিং চলছে রেডিও ওয়েভের মাধ্যমে।
মুখোমুখি ট্রেন থাকলে এই রেডিও তরঙ্গের সাহায্যেই দূর থেকে আপনাআপনি ব্রেক নিয়ন্ত্রিত হতে শুরু করবে। ড্রাইভারের কাছেও পৌঁছে যাবে বিপদের সংকেত ধ্বনি।
সম্প্রতি পরীক্ষাটি মধ্য রেলওয়ের গুল্লা-দক্ষিণ চিড্ডায় স্পেশাল ট্রেন চালিয়ে করা হয়। পরীক্ষার পর ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, “দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ রোখা সম্ভব হয়েছে। ‘কবচ’-এর সাহায্যে সামনে থেকে আসা লোকোর ৩৮০ কিলোমিটার দূরে থেমে গিয়েছে অন্য লোকোমোটিভ।”
নিজের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করতে গিয়ে উচ্ছসিত হয়ে উঠেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। সোশ্যাল মাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, “লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে ট্রেন আসার সঙ্গে সঙ্গেই হুইসেল বাজছে! ট্রেনের চালককে কিচ্ছু করতে হচ্ছেনা। পুরোটাই স্বয়ংক্রিয়।” এরপর মুখোমুখি সংঘর্ষ আটকাবার পরীক্ষাও সফল হয়েছে বলে জানান তিনি।
পাশাপাশি জানা যায় এখনও পর্যন্ত ৬৫ টি ইঞ্জিন ও ১,০৯৮ কিলোমিটার পর্যন্ত রেলপথে এই প্রযুক্তি বাস্তবায়িত হয়েছে। চলছে আরও বিস্তারের কাজ। আগামীতে দিল্লী মুম্বই ও দিল্লী হাওড়ার ৩,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তারিত হবে। এই প্রযুক্তি বাস্তবায়নের জন্য কিলোমিটার প্রতি ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ।