পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে যতজন ভবিষ্যতবাণী জানেন তাঁদের মধ্যে সবার উপরে ছিল শুভেন্দু অধিকারীর নাম। তিনি অবশ্য কেবলমাত্র সিবিআই রেড সম্পর্কেই ভবিষ্যবাণী ছাড়তেন। তবে এবার শুভেন্দুকেও ছাপিয়ে দিলেন দক্ষিণ বনগাঁর বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার। তিনি ভবিষ্যতবাণী করেছেন অসুস্থ অনুব্রত মন্ডলের অন্তর্ঘাতী মৃত্যু নিয়ে, যেটাকে নিছক রসিকতা বলে মেনে নিচ্ছেননা অনেকেই।
স্বপন মজুমদার প্রকাশ্যেই বলেছেন, “বগটুই কান্ডের মাস্টারমাইন্ড অনুব্রত মন্ডল এখন পেট ফুলিয়ে উডবার্ন ওয়ার্ডে শুয়ে আছেন। আমার তো মনে হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই উডবার্ন ওয়ার্ড থেকে তাঁকে আর ফিরতে দেবেননা। কারণ উনি যদি ফেরেন, তাহলে সিবিআইয়ের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব কুকীর্তি উগরে দিতে হবে। তাহলে ভাইপো, পার্থ চট্টোপাধ্যায় সকলেই জেলে যাবে।”
সিবিআই ডেকে পাঠানো মানেই যেমন কেউ দোষী সাব্যস্ত হননা, তেমনই কোনও প্রমাণ ছাড়াই যে ভাষায় এইধরনের অভিযোগ করেছেন স্বপন মজুমদার তাতে হইচই পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। অনুব্রত মন্ডল সম্পর্কে এই ধরণের মন্তব্য করেই অবশ্য থামেননি স্বপন মজুমদার। তিনি আরো সংযোজন করেছেন, এবং সেটা মারাত্মক মন্তব্য।
তিনি বলেন, “অনুব্রত মন্ডল ভাবছেন উডবার্ন ওয়ার্ডে শুয়ে শুয়ে সিবিআইয়ের হাত থেকে বেঁচে যাবেন। কিন্তু তা হবেনা। হয় আগামী দিনে তাঁকে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে হবে আর নাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিষ ইঞ্জেকশনে মরতে হবে।”
সরাসরি প্রকাশ্য এই অভিযোগে হুলুস্থুল বেধে গিয়েছে। প্রবল ক্ষিপ্ত হয়েছে ঘাসফুল শিবির। বনগাঁর তৃণমূল নেতা গোপাল শেঠ পাল্টা স্বপন মজুমদারকে লক্ষ্য করে বলেছেন, “উনি আর সাধারণ মানুষের কাছে বিধায়ক বলে পরিচিত নন। উনি অনুব্রত মন্ডল সম্পর্কে অসংলগ্ন কথা বলছেন। এসব নিয়ে কথা বলবার উনি কে?”
তৃণমূল নেতার স্পষ্ট দাবি, “সিবিআই দিয়ে অনুব্রত মন্ডলকে উত্যক্ত করানো হচ্ছে। আর পুরো বিষয়টাই তদন্তসাপেক্ষ। ওঁর বলার কী অধিকার আছে? ওঁর বিরুদ্ধেই তো মাদক মামলার অভিযোগ ছিল! বিজেপিকে পয়সা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। উনি জাল সার্টিফিকেট দিয়ে বিধায়ক হন। এসব বলার অধিকার ওঁকে কে দিয়েছে?”
বাস্তবিক এভাবেই গরম মন্তব্য করে কাদা ছুঁড়তে গিয়ে পাঁক ছিটকে এসেছে বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারের গায়ে। আগুন জ্বলা বগটুইয়ের ঘরের হারানো রহস্য যে তিমিরে সে তিমিরেই।