পাঞ্জাবে নির্বাচনের ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। ঠিক সেইসময়ই পাঞ্জাবের শিখ জনগণের মন টানার চেষ্টায় নতুন টোপ ফেললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২৬ ডিসেম্বর তারিখটিকে গুরু গোবিন্দ সিংয়ের পুত্রদের উৎসর্গ করে ‘বীর বাল দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে দিলেন। আপত্তি জানিয়েছেন সাকেত গোখলে সহ তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বরা। নির্বাচন ঘোষিত হয়ে যাওয়ার পরে এধরণের আচরণকে ‘নির্বাচনেরের বিধিভঙ্গ’ বলেই মনে করছেন।
ডিসেম্বরে ৩ কৃষি আইন প্রত্যাহার করে সম্ভবত প্রধানমন্ত্রী ভেবেছিলেন বাাজি মেরে দিয়েছেন। তারপরেও পাঞ্জাবের মন জয়ে খামতি রয়ে গেছে, সাম্প্রতিক ঘটনাই তার প্রমাণ। পাঞ্জাবের অবরোধকারীরা প্রধানমন্ত্রীর কনভয়কে রাস্তা ছেড়ে না দেওয়ায় কার্যত দ্বিতীয়বার পরাভূত হতে হল নরেন্দ্র মোদীকে। এবার তাই অন্য রাস্তা ধরলেন তিনি। গুরু গোবিন্দ সিংয়ের ৪ পুত্র হত্যার ভাবাবেগকে কাজে লাগিয়ে শিখ সম্প্রদায়ের মন টানার চুম্বকীয় চেষ্টা।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “মাতা গুজরি, গুরু গোবিন্দ সিং ও তাঁদের চার পুত্র সাহিবজাদের বীরত্ব লক্ষ লক্ষ ভারতীয়কে শক্তি যোগায়। তাঁরা অন্যায়ের সামনে নতি স্বীকার করেননি। তাঁদের বিষয়ে সকলের জানা উচিত।”
ধর্মীয় সুড়সুড়ি এখানেও কাজ করছে বলেই অনেকে মনে করছেন। কথিত আছে, গুরু গোবিন্দ সিংয়ের ৪ পুত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণে অস্বীকার করায় মুঘলদের হাতে প্রাণ হারান। চমকৌরের সংঘর্ষে এই প্রাণপাতের ঘটনা ঘটেছিল ডিসেম্বরের ২৬ তারিখে। তাই এই বিশেষ দিনটি পাঞ্জাব যোদ্ধাদের উৎসর্গ করে ‘বীর বাল দিবস’ বলে ঘোষণা করলেন নরেন্দ্র মোদী, যাতে পুরোনো ঘা খুঁচিয়ে বারংবার প্রত্যেক বছরে মনে করিয়ে দেওয়া যায়!
কিন্তু ডিসেম্বর মাস তো আগেই পার হয়েছে, তখন কেন এই বিশেষ দিবসের কথা মনে হলনা প্রধানমন্ত্রীর? এটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। ফিরোজপুরের রাস্তা থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে ফিরে আসার পরেই কি গুরু গোবিন্দ সিংয়ের পুত্রদের জন্য প্রাণ কেঁদে উঠেছে!
উল্লেখ্য শনিবারই পাঞ্জাবের বিধাসভা ভোট ঘোষিত হয়েছে। তারপরেই এই ঘোষণায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের তরুন মুখপাত্র ও সমাজকর্মী সাকেত গোখলে পরিস্কার বলেছেন , “প্রথম দিনই মোদী নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করেছেন। ভোটমুখী রাজ্যে প্রভাব ফেলতে নিজের পদের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে তিনি এই ঘোষণা করেছেন।”