হিন্দু-মুসলিম সহ সকল ধর্মের মানুষই তাজমহলে প্রবেশ করতে পারেন। এক্ষেত্রে কোনোদিন কোনও নিষেধাজ্ঞা চালু হয়নি। ধর্মীয় বাধার প্রশ্নই ওঠেনা, কারণ ইতিহাস বলছে মুঘল সম্রাটরা এদেশে শাসন করতে এলেও ভারতকে নিজেদের দেশই মনে করতেন। সেই ইতিহাস যদিও বিকৃতির চেষ্টা আগেও হয়েছে, বর্তমানে সেই চেষ্টা প্রবল আকার ধারণ করে চলেছে। সেই আবহেই নতুন করে এক ধুয়ো উঠল। আগ্রার সুবিখ্যাত তাজমহলে গেরুয়াধারী হিন্দু সন্ন্যাসীকে ঢুকতে বাধা দিয়ে গেটেই আটকালো নিরাপত্তা রক্ষীরা!
তাজমহল দর্শনকারী এই হিন্দু সাধুর পরনে ছিল গেরুয়া বেশ, কপালে রক্ততিলক, হাতে ধর্মদন্ড। এহেন এক সাধু আবির্ভাব হতেই সজাগ হয়ে রুখে দাঁড়ালো নিরাপত্তা রক্ষীরা। কিন্তু কেন?
সাধুর নাম জগৎগুরু পরমহংস আচার্য। অযোধ্যার ছাবিনি এলাকা থেকে তিন শিষ্যকে সাথে নিয়ে তাজমহল দেখতে যান তিনি। সাধুর অভিযোগ –আর্কিওলজিক্যাল সার্ভের কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই রক্ষীরা তাঁর পথরোধ করে দাঁড়ায়। তিনি প্রতিক্রিয়া দিয়ে বলেছেন, “গেরুয়া পোশাকের জন্যই আমাদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষীদের সামনেই ওখানে উপস্থিত পর্যটকরা আমার বেশভূষা নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করছিল।”
আর্কিওলজিস্ট রাজকুমার প্যাটেল অবশ্য এই অভিযোগে সম্মত হননি। তিনি জানান, “ওই সন্ন্যাসীর হাতে একটি ধর্মদন্ড (লাঠি) ছিল। সেটা দেখেই নিরাপত্তাকর্মীরা ওনাকে আটকায়। ধর্মদন্ডটি বাইরে রেখে ভেতরে প্রবেশ করতে অনুরোধ করা হয়। তিনি সেই শর্তে রাজি হননি।”
ঝামেলার সূত্রপাত গেরুয়া নয়, হাতের বিশেষ লাঠিটি নিয়ে। এমনটাই জানিয়েছে তাজমহলের কর্তব্যরত নিরাপত্তাকর্মীরা। সেটাকে কি কোনওরকম অস্ত্র মনে করছিলেন তাঁরা? এই ঘটনায় আরো বড় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে –সাধু-সন্ন্যাসী-গেরুয়া বেশধারীদের সম্পর্কে একটা আলাদা কোনও ইমেজ প্রচারিত হচ্ছে কি? যেজন্য তাঁরা নিজেরাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ী? ওয়াকিবহল মহলে প্রশ্নটা উঠেছে বৈকি!