সম্প্রতি অনলাইন অ্যাপ ‘বুল্লি বাই’ নিয়ে বিতর্ক চরমে। দিল্লী থেকে মুম্বই পর্যন্ত বিস্তৃত এক চক্র এই অ্যাপ ব্যবহার করে মুসলিম মহিলাদের ছবি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শেয়ার করে, সেই ছবি নিলামে কেনাবেচা চালাচ্ছিল বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
গত শনিবার এক মহিলা সাংবাদিক ট্যুইট করে জানান, “এটা ভীষণ দুঃখজনক যে, একজন মুসলিম মহিলা হিসেবে আপনাকে এই ভয় ও ঘৃণার অনুভূতি নিয়ে নতুন বছর শুরু করতে হবে।” পাশাপাশি ট্যুইটার মারফত এই জঘন্যতম অনলাইন অ্যাপ বুল্লিবাই এবং হরিদ্বেরের ধর্মসংসদ নিয়ে জোরালো প্রতিবাদ তোলেন বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার জাভেদ আখতার।
ট্যুইটে তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যেই কটাক্ষ করে বলেন, “এদিকে শয়ে শয়ে মুসলিম মহিলাকে নিলামে তোলা হচ্ছে! আর ওদিকে তথাকথিত ধর্ম সংসদে পুলিশ ও জনসাধারণকে হিংসাত্মক উস্কানি দিয়ে অস্ত্র তুলে নিতে বলা হচ্ছে! আমি অবাক হচ্ছি প্রধানমন্ত্রীর স্তব্ধতা দেখে! এই কি তাহলে সব কা সাথ ?”
এই প্রশ্ন তোলার পরেই নেটিজেনদের সমালোচনা ও বিদ্রূপের মুখে পড়েছেন শিল্পী-কবি জাভেদ আখতার। তর্ক এমনই চরমে ওঠে যে, আবারো এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ট্যুইট করতে বাধ্য হন।
জাভেদ আখতার লিখেছেন, “যখন থেকে আমি মুসলিম মহিলা নিলাম নিয়ে আওয়াজ তুলেছি, তখন থেকেই গডসের(নাথুরাম) পূজারি এবং পুলিশকে নরহত্যার পরামর্শদাতারা আমার পরলোকগত স্বাধীনতা সংগ্রামী ঠাকুরদাদার নিন্দায় মেতে উঠেছেন যিনি ১৮৬৪ সালে ‘কালাপানি’-তে মৃত্যুবরণ করেছিলেন! এইসব অপদার্থদের আর কিই বা বলা যায়!”
প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন ও কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের সমালোচনা করতে গিয়ে বিরুদ্ধবাদী নেটিজেনদের দ্বারা এইভাবেই হেনস্থার শিকার হয়েছেন জাভেদ আখতার।
প্রসঙ্গত, এই বিতর্ক চলাকালীনই কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান,’বুল্লি বাই অ্যাপটি ব্লক করা হয়েছে।’এই অ্যাপটির সাথে সম্পর্কিত এক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রকে ব্যাঙ্গালোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএনআই। তবে এখনই তার সম্পর্কে বিস্তারিত কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ধৃত ব্যক্তির সূত্র ধরেই অপরাধীদের মূল চক্রকে খুঁজে বার করার চেষ্টা করছে মুম্বই পুলিশ, এমনটাই মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী সাতেজ ডি পাতিল জানিয়েছেন।