বাংলার বুদ্ধিজীবিরা এখন কোথায় গেলেন? তাঁরা মুখ খুলছেননা কেন? এই প্রশ্ন রামপুরহাটের অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে উঠেছে। চারপাশের ঘটনায় বুদ্ধিজীবিদের বক্তব্য শোনার দাবি উঠতেই পারে, ওঠাটাই স্বাভাবিক। তবে এই প্রশ্নে তির্যক উত্তরে বুদ্ধিজীবিদের বিদ্ধ করতে বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ যে ভাষাও ভঙ্গি ব্যবহার করেছেন তাকে অশালীন মনে করছেন একাংশের মানুষজন।
এখানে বলে রাখা ভালো, ‘বুদ্ধিজীবি’ বা ‘সুশীল সমাজ’ বলে সাধারণত পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষের লোকজন যাঁদের আক্রমণ করে থাকেন, আসলে তাঁরা হলেন সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় গঠিত সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম ‘বুদ্ধীজীবি মঞ্চ’ যাঁরা ৩৪ বছরের বাম রাজত্বকে উপরে ফেলতে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। তালিকায় কয়েকটি নাম যেমন — সুজাত ভদ্র, শুভাপ্রসন্ন, অপর্ণা সেন, কৌশিক সেন, প্রতুল মুখোপাধ্যায় এমনই আরো কয়েকজন। কবীর সুমনের নামটিও করা যায়, তবে কবীর সুমন তৃণমূলের রাজনীতিতে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন, বাকিরা নন। এখন বিরোধী দলের টার্গেটই হলো, বড়সড় কোনও অন্যায়ে রাজ্যের শাসক দল অভিযুক্ত হলেই, সঙ্গে সঙ্গে বুদ্ধিজীবি মঞ্চকে লক্ষ্য করে তির্যক আক্রমণ করা। রামপুরহাটের গণহত্যার ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটেছে।
তবে বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার ওয়ালে বুদ্ধিজীবিদের লক্ষ্য করে যে কদর্য ভাষায় প্রকাশ্য আক্রমণ শানিয়েছেন, যা নিন্দনীয় বলেই আখ্যায়িত করা হচ্ছে।
সৌমিত্রা খাঁ ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন , যেখানে দেখা যাচ্ছে এক মহিলা দুটি কন্ডোমের প্যাকেট দিয়ে চোখদুটো ঢেকে রয়েছেন। এই ছবির সাথে বিজেপি নেতা লেখেন, “বাংলার বুদ্ধিজীবিরা এখন চোখে কন্ডোম বেঁধে ল্যাংটা হয়ে ঘুমোচ্ছেন।”
বিজ্ঞাপনের ছবির সাথে বুদ্ধিজীবিদের এই অশালীন আক্রমণের পোস্টটি দেখে অনেকেই মজা নিয়েছেন। কেউ আবার সমর্থন জানিয়েছেন, ‘সত্যিই তো, বাংলার যে বুদ্ধিজীবিরা সমাজে কোনও অন্যায় সংঘটিত হলেই মোমবাতি মিছিম বের করেন, তাঁরা বগটুইয়ের ঘটনায় সাড়াশব্দ করছেননা কেন?” অনেকে আবার সৌমিত্র খাঁর এই বক্তব্যের ধরণটির সমালোচনাও করেছেন কেউ কেউ। তাঁদের মতে সৌমিত্র খাঁ একজন সাংসদ, জনপ্রধিনিধি হয়ে এই ভাষা ব্যবহার করতে পারেননা। বিজেপি নেতা সৌমিত্রর এই উক্তি নিয়ে শুক্রবার তুলকালাম শুরু হয়।