সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসোলেশনে রয়েছেন বিজেপির রাজ্যসভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শনিবার সর্দিকাশির উপসর্গ দেখা দেওয়ায় পরেরদিনই কোভিড টেস্ট করানো হয়। রিপোর্ট পজিটিভ আসায় তৎক্ষণাৎ তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এই অবস্থাতেই প্রায় চমকে দিয়ে অপ্রত্যাশিত ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন আসে। খোঁজখবর নিয়ে সুকান্ত মজুমদার কেমন আছেন জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। দুজনের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথাও হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকল রাজনীতিকদের মতো প্রতিপক্ষ সুকান্ত মজুমদারকেও সুস্থতা কামনায় ফুল-মিষ্টিও পাঠান।
মমতার এই সৌজন্যের প্রত্যুত্তরেই এবার সুকান্ত মজুমদার সোশ্যাল মাধ্যমে একটি পোস্ট করলেন, যার মধ্যে ধন্যবাদের সঙ্গে রাজনৈতিক খোঁচাও প্রকাশিত হয়েছে। বিজেপি নেতা সুকান্তর এই পোস্ট নিয়ে সাড়া পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
সুকান্ত মজুমদার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন। আমি এইজন্য ওনাকে ধন্যবাদ জানাই। উনি আমার প্রতি যে রাজনৈতিক সৌজন্যতা দেখিয়েছেন তা ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দেখালে আমি আরও খুশি হতাম।”
এই পোস্টের পরেই নিন্দার ঝড় উঠেছে রাজনীতির হাওয়ায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যবোধে যতটা মুগ্ধ বাংলার মানুষজন, সুকান্তর এই ‘অভদ্রজনোচিত’ প্রত্যুত্তর দেখে ততটাই বিরক্ত হয়েছেন। তাছাড়া সাম্প্রতিক অতীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তেমন কোনও অসৌজন্যমূলক কথা স্মরণে আসছেনা; বরং একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর প্রকাশ্য সভায় ‘দিদি ও দিদি!’ সম্বোধন এবং দিলীপ ঘোষের। ‘বারমুডা পরতে বলার’ স্মৃতিই ফুটে উঠছে। যে আচরণের বিরুদ্ধে সিপিএম, কংগ্রেস পর্যন্ত সরব হয়েছিল।
এরপরেও, দুঃসময়ে রাজনৈতিক দলাদলি ভুলে যে নিরপেক্ষ সৌজন্যবোধের পরিচয় মমতা দেখিয়েছেন তা দৃষ্টান্তস্বরূপ। অপরদিকে সুকান্ত মজুমদারের এই লিখিত পোস্টে ‘প্রধানমন্ত্রীকে সৌজন্য দেখাতে বলার’ অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্যে রাজনৈতিক অসূয়াই প্রকাশ পেয়েছে। এই মন্তব্যে সুকান্ত মজুমদার নিজের এবং দলের ভাবমূর্তিতেই আরো খানিকটা কালি লেপে দিলেন, বাংলার নাগরিক সমাজ এমনটাই মনে করছেন।