সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর। এবার বেতনবৃদ্ধি নিয়ে বড় ঘোষণা করল রাজ্যসরকার। ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের পেশ করা বাজেটে সেই ইঙ্গিতই প্রকাশিত হয়েছে। তবে ডিএ-বৃদ্ধির প্রশ্নে রাজ্যসরকারের ইউনিয়নগুলো এখনও সরব। তবে আপাতত বেতনবৃদ্ধির ইঙ্গিত দিলেও বাড়ছেনা ডিএ, এর জন্যও কারণ দেখিয়েছে রাজ্যসরকার।
গত শুক্রবারই বিধানসভায় রাজ্যের বাজেট পেশ করা হয়। এই বাজেট সংক্রান্ত তথ্য অনুযায়ী সরকারি কর্মীদের বেতন বাড়ানোর জন্য প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে। ডিএ না বাড়লেও , বেতনবৃদ্ধির এই ঘোষণার ফলে সেই ক্ষোভ খানিক প্রশমিত হবে বলেই কর্মকর্তাদের একাংশ মনে করছেন।
সাধারণত ৩ শতাংশ সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়ানো হয়। সেই হিসেবে সার্বিক মূল্যমানের নিরিখে ১ শতাংশ বেতন বাড়াতে মাসিক ৬৪ কোটি টাকা বাড়তি বরাদ্দ প্রয়োজন, বছরে যার পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৭৬৮ কোটি টাকা। এইভাবে ৩ শতাংশ বেতনবৃদ্ধির জন্য বছরে ২,৩০৪কোটি টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন। চলতি বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সর্বমোট ৬০,৫২৩ কোটি বরাদ্দ করেছে রাজ্যসরকার। গত আর্থিক বছরে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৫২,৯০০কোটি টাকা অথচ খরচ হয়েছে প্রায় ৫৬,৬৫০ কোটি টাকার কাছাকাছি। সেই তূল্যমূল্য বিচারে চলতি বছরে গতবারের চাইতে প্রায় ১,০০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ করল রাজ্যসরকার।
অর্থদপ্তরের নির্ধারিত বিজ্ঞপ্তি অনুসারে প্রতিবছর জুলাই মাসের ১ তারিখে রাজ্যসরকারি কর্মীদের বেতন বাড়ানো হয়। সুতরাং আগামী জুলাই মাস থেকেই এই বর্ধিত বেতন চালু হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। তবে ডিএ আপাতত বাড়াচ্ছেনা রাজ্য। আর অপারগতার জন্য কেন্দ্রকেই দোষারোপ করেছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাজেট অধিবেশনের দিনই সাংবাদিক সম্মেলনের বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী ডিএ বৃদ্ধি না হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বঞ্চনাকেই দায়ী করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,”রাজ্যের আর্থিক স্থিতি ভালো হলে সরকার নিজে থেকেই ডিএ বাড়াবে।” তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিপক্ষে আওয়াজ তুলেছে কোঅর্ডিনেশন কমিটি।
এই কমিটির পক্ষ থেকে বিজয়শঙ্কর সিংহ বলেছেন, “৩ শতাংশ বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ম অনু্যায়ী ঠিকই আছে। তবে আমাদের ডিএ এখনও ২৮ শতাংশ বাকি। সরকার এবিষয়ে যা বলছে তা আমরা মানছিনা।” কেন্দ্র-রাজ্য উভয়ের নীতিকেই মূলত দায়ী করে বিজয়শঙ্কর বলেন, “ডিএ নির্ধারিত হয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ওপর। কেন্দ্রীয় সরকার ৩১ শতাংশ ডিএ দিয়েছে। অনেক রাজ্য তা মেনেও নিয়েছে। দুএকটি রাজ্যেই শুধু তা হয়নি।” এই দাবি জানিয়ে আগামী ২৮ ও ২৯ মার্চ ধর্মঘটের আগাম ঘোষণা দিয়ে রেখেছে কোঅর্ডিনেশন কমিটি।