রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ১২ দিন অতিক্রান্ত হবার পর, এইবার সরাসরি দুই দেশের মধ্যে হস্তক্ষেপ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এতদিন পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বহুবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছিলেন ব্যাপারটিতে মধ্যস্থতা করতে। তবে রাশিয়ার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় বেশ খানিকটা চাপের মধ্যে ছিল ভারত। রাশিয়ার সরাসরি বক্তব্য ছিল , ‘বিশ্ব পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে পাশ্চাত্যের দেশগুলি আমাদের সহযোগিতা করছেনা, এটা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিরাট এক সুযোগ।’ অর্থাৎ রাশিয়ার পাশে থাকলে পশ্চিমি দেশগুলিকে টেক্কা দিতে পারবে ভারত, এমন ইঙ্গিতই করেছিল রাশিয়া। অপরদিকে, ইউকক্রেনেরর রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কির অনুরোধের পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রী দোমিত্রি কুলেবা ভারতের কাছে আর্জি জানান মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সকলের স্বার্থে রাশিয়াকে যুদ্ধ বন্ধ করার আবেদন জানাতে। অবশেষে সেই ডাকে সাড়া দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
৭মার্চ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে টেলিফোনে প্রায় ১ঘন্টা ধরে আলোচনা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। কথা হয় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সাথেও। উভয় দেশের রাষ্ট্রপতি মুখোমুখি আলোচনায় বসুন, এই ইচ্ছাই প্রকাশ করেছেন মোদী। এতদিন ধরে দু’দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হলেও সরাসরি জেলেনস্কি ও পুতিন মুখোমুখি বসেননি। এবার সেই পরামর্শই দিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেইসঙ্গে শান্তি বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি এটাকেই ভারতের প্রথম সরাসরি মধ্যস্থতা বলা যায়।
ভ্লাদিমির পুতিনকে জেলেনস্কির সাথে বৈঠকে মুখোমুখি হতে বলার পর ভারতীয় পড়ুয়াদের প্রসঙ্গটিও উত্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। পড়ুয়াদের ফেরাতে “সেফ প্যাসেজ”-এর দাবি করেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে রাশিয়ার বক্তব্য, আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চায় ইউক্রেন। যা অস্বীকার করেছে রাজধানী কিয়েভ। উল্টে তাদের বক্তব্য, যুদ্ধবিরতির কথা বললেও তা মোটেই করছেনা রাশিয়া, লাগাতার যুদ্ধের কারণে “সেফ প্যাসেজ” তৈরি করতে অসমর্থ হচ্ছে, এমনটাই দাবি ইউক্রেনের।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর সাথে আলোচনার পর ইউক্রেনের চারটি শহরে সাময়িকভাবে হলেও যুদ্ধবিরতির কথা ঘোষণা করেছেন পুতিন। তা কতদূর ফলপ্রসূ হয় সেটাই এখন দেখার।