আজ ১৫ জানুয়ারি, ভারতীয় সেনা দিবস। প্রতি বছরের মতো এবছরেও দিল্লীর ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে সেনা দিবস উদযাপিত হচ্ছে করোনা বিধিনিষেধ মেনে। সেনা দিবস হিসেবে এই বিশেষ দিনটির তাৎপর্য অপরিসীম। কেননা ১৯৪৯ সালের ১৫ জানুয়ারি তারিখেই শেষ ব্রিটিশ ‘কমান্ডার ইন চিফ’ স্যার ফ্রান্সিস বুটচার ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রথম ‘কমান্ডার ইন চিফ’ কে.এম. কারিয়াপ্পা-র হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন। এই দিনটিতেই শুরু হয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর জয়যাত্রা।
কে. এম.কারিয়াপ্পাকেই দেশের প্রথম সেনাপ্রধান হিসেবে বিবেচিত করা হয়। এই বছর ১৫ জানুয়ারি ‘ভারতীয় সেনা দিবস’ ৭৪ তম বর্ষে পদার্পণ করল।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রথম প্রতিষ্ঠা ১৮৯৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে তৈরি হলেও মূলত তা ছিল ঔপনিবেশিক ভারতে ‘ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মি।’ ভারতের স্বাধীনতার পর যা ‘ইন্ডিয়ান আর্মি’ নামে পরিচিত হয়।
তৎকালীন ভারতীয় সেনাবাহিনীর একাধিক বীরত্বের নজির ধরে রেখেছে ইতিহাস। এমনকি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫ হাজার ফিট উচ্চে অবস্থিত সিয়াচেন হিমবাহের মতো দুর্গম জায়গাতেও যুদ্ধ করে দেখিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। ১৯৭১ সালের ভারত-বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান যুদ্ধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল ভারতের সেনাবাহিনী। ৯৩ হাজার পাকিস্তান সেনা সেবার ভারতের কাছে হার মেনে পরাজয় স্বীকার করে।
১৫ জানুয়ারি তারিখটিতেই কে.এম. কারিয়াপ্পার নেতৃত্বে প্রথম ‘ইন্ডিয়ান আর্মি’-র যাত্রা শুরু। তাই এই দিনটিকেই সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রতিবছর সেনাবাহিনীর তিন শাখা — পদাতিক বাহিনী, নৌসেনা ও বায়ুসেনার প্রধান কার্যালয়ে সেনা দিবস উদযাপিত হয়। দিল্লী ক্যান্টনমেন্ট প্যারেড গ্রাউন্ডে কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। উল্লেখ্য, এই প্যারেড গ্রাউন্ডের নাম পরিবর্তিত করে রাখা হয়েছে কে. এম. কারিয়াপ্পা ময়দান।
এছাড়াও ‘ইন্ডিয়া গেট’-এ অবস্থিত মেমোরিয়াল ‘অমর জওয়ান’-কে কেন্দ্র করেও স্মৃতি অর্পণ করা হয়ে থাকে। ভারতীয় সেনাদিবসে যেসকল সেনা দেশের জন্য শহীদ হয়েছিলেন, তাঁদের সকলকেই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। পাশাপাশি বীরত্ব ও সাহসিকতার জন্য সেনাবাহিনী থেকে নির্বাচিত সেনা প্রতিনিধিদের পুরস্কার দেওয়া হয়।