চোখের জলও বরফশীতল হতে জানে। তেমনই ফুলও আগুন হতে পারে। তেমন করেই ইউক্রেনের এক বৃদ্ধা মহিলা জবাব দিলেন এইমূহুর্তের যুদ্ধবাজ দেশ রাশিয়াকে, শুধু রাশিয়া নয়, সমস্ত যুদ্ধবাজ আগ্রাসনের বিরুদ্ধেই তাঁর এই জবাব। একসময়ের সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা অধুনা রূপান্তরিত রাশিয়ার সাথে এমন নির্মম রসিকতায় দুয়ো দেওয়া হলো যে, বিন্দুমাত্র অনুভব থাকলে এই দেশটির রাষ্ট্রপতি লজ্জায় মিশে যেতেন।
সামাজিক মাধ্যমে তথ্যটি সামনে আসতেই নেটিজেনদের অনেকেই এমনই মত পোষণ করছেন। শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক সময়ের ইতিহাসে ইউক্রেন ও রাশিয়ার ইতিহাসে এক গল্পের জন্ম দিয়ে গেলেন এক অশীতিপর বৃদ্ধা মহিলা।
ট্যুইটারে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক বৃদ্ধা মহিলা নির্ভয়ে কাছে এসে অস্ত্রধারী রুশ সেনাকে জিজ্ঞেস করছেন, “তোমরা এখানে কী করছ? কেন এসেছ এইখানে?”
সৈন্যরা বৃদ্ধাকে জবাব দেয়, “আমরা এখানে পাহারা দিচ্ছি। আপনি দাঁড়াবেননা চলে যান।” বৃদ্ধা এই চোখরাঙানি উপেক্ষা করে সরাসরি রুশ সেনাদের চোখে চোখ রেখে বলেন, “তোমরা দখলদার, তোমরা ফ্যাসিস্ট! এইসব বন্দুক দিয়ে তুমি আমাদের দেশের কী করবে?” এই বলে তিনি নিজের কোটের পকেট থেকে একমুঠো সূর্যমুখী ফুলের বীজ বের করে সৈন্যদের দিকে বাড়িয়ে ধরে বলেন, “নাও, এইগুলো রাখো। তুমি যখন এখানে মরে পড়ে থাকবে, তখন এই বীজগুলো থেকে গাছ হবে। সূর্যমুখী ফুল ফুটবে।”
বৃদ্ধা কেন সূর্যমুখী ফুল দিলেন, আপনাদের মনে প্রশ্ন উঠতে পারে। কারণ সূর্যমুখীই হলো ইউক্রেনের জাতীয় ফুল। একদিন যুদ্ধ হয়তো শেষ হবে। অতীতেও হয়েছে। একদিকে সাম্রাজ্যের বিস্তার অন্যদিকে ধ্বংসও হয়ে গিয়েছে বহু সাম্রাজ্য। কিন্তু ফুলের মৃত্যু নেই। ফুল তখনও যেমন ফুটতে, কালও তেমনই ফুটে উঠবে। এই ফুল যারা বারুদে বিষিয়ে দিতে এসেছে তাদেরকে এর চেয়ে যোগ্য জবাব আর কী দেওয়া যেতে পারে?