রাত পেরোলেই নতুন বছর। দুনিয়াভর জানান দিয়ে পা ফেলবে নতুন বছরের নতুন দিন। আসলে সময়ের তো কোনও শব্দ হয়না, সে নিঃশব্দেই আসে। তাকে শব্দ দিয়ে, আলো দিয়ে, আতসবাজি ফাটিয়ে গোটা আকাশ রঙে রোশনাই করে নতুন বছরকে সশব্দ চিৎকারে ‘ও য়ে ল কা ম!’ বলে আমরাই অভ্যর্থনা জানাই। তাইতো?
আমি, আপনি , আমরা সবাই জানি আজ অর্থাৎ পুরোনো বছরের শেষদিন ৩১ডিসেম্বর রাত্রে কী হবে! ঘড়ির কাঁটা সাড়ে ১১টা পার হলেই শুরু হবে প্রতীক্ষা। ১১:৫৫ নাগাদ শুরু হয়ে যাবে কাউন্টডাউন…হাতের আগুন হাউইয়ে ছোঁয়ার অপেক্ষা..স্টিরিওসিস্টেমে আঙুল থমকে অপেক্ষায়…সম্মিলিত ভাবে সব্বার বন্ধ ঠোঁটের ডগায় হ্যাপি নিউয়ার উচ্চারণের রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষা…প্রতীক্ষা কিসের! হ্যাঁ ঠিকই, প্রতীক্ষা রাত ১২:০০টার। ঘড়ির কাঁটা নির্ভুল ১২টা ক্রস করলেই সোচ্চারে হ্যাপি নিউইয়ার শুরু। কিন্তু একটু খেয়াল করেছেন কি, নিউইয়ারের আগমনের সময় হিসেবে এই মাঝরাত্তিরটাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে কেন?
সবাই বলবেন উদযাপন তো রাতে হলেই ভালো মানাবে। অন্ধকার আকাশ ভরে উঠবে আতসবাজির আলোয়, সেটা মাঝরাত ছাড়া কীভাবে সম্ভব? ঠিকই, কিন্তু একটা প্রশ্ন এখনও বাকি থেকে যায়। মাঝরাতের অন্ধকার আকাশই যদি চাই,তবে সেটা সাড়ে ১০ টা বা ১১টায়-ও তো পাওয়া যেত! সময় হিসেবে কেন ওই ১২-র পিঠে চড়ে নিরালম্ব অবস্থান? অবশ্যই এর একটা নির্দিষ্ট কারণ আছে।
কারণটা হল ইংরেজি নববর্ষের ক্যালেন্ডারের হিসাব। একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, বাংলায় নববর্ষ আমরা সকাল অর্থাৎ সূর্যোদয়ের সাথেই পালন করি। কিন্তু ইংরেজি ক্যালেন্ডার ঘড়ির কাঁটার চব্বিশ ঘন্টার হিসেবে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়ের মাঝামাঝি অবস্থানটাকেই দিনের শেষ কিংবা সূচনা বলে ধরে রেখেছে। এই হিসাব নির্ভুল রাখার জন্যেই প্রতিদিন রাত ১২টার পর নতুন তারিখ শুরু হয়ে যায়। একইরকমভাবে নতুন বছরের নতুন দিনও রাত ১২টার পরেই আসে। এবছরও তাই। শুভেচ্ছা ও আগমনের বার্তা নিয়ে ঘড়ির কাঁটায় ১২টার অপেক্ষা!