সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদবের সমর্থনে খোদ প্রধানমন্ত্রীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতেই সভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার এই সভার বক্তব্যে মমতার তীব্র ঝাঁঝ প্রকাশ পায়। স্বয়ং অখিলেশই মাথা নেড়ে হাততালি দিয়ে বারংবার দিদিকে সমর্থন জানাচ্ছিলেন।
বারাণসীতে মমতার গাড়ি ঘিরে বিজেপি যে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল, তারও কড়া জবাব দেন নিজের বক্তৃতায়। মমতা বলেন, “কাল কয়েকজন বিজেপি কর্মী আমার গাড়ি আটকেছিল। আমার গাড়িতে ধাক্কা মেরেছিল। বলেছিল ফিরে যান। তখনই আমি বুঝেছি ওদের হার নিশ্চিত। ওদের বিদায় নেবার পালা ঘনিয়ে এসেছে।” পাশাপাশি বলেন, “যে অপমান কাল আমাকে করা হয়েছে এর উত্তর মা বোনরা দেবেন।”
নিজের রাজনৈতিক অতীত স্মরণ করিয়ে বাংলার মমতা দিদির স্পষ্ট ঘোষণা, “আমি ভয় পাইনা। পালাইনা, লড়াই করি। সিপিএম আমাকে অনেক মেরেছে। আমি মাথা নত করিনি। আমি এখানে আবার আসব।” বিজেপির ‘জয় শ্রীরাম’ শ্লোগান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার প্রশ্ন, “মা সীতার নাম একবারো আপনারা উচ্চারণ করেননা কেন?”
এদিন একেবারে যুদ্ধংদেহী মেজাজে যোগীজিকে আক্রমণ শানিয়েছেন মমতা। সরাসরি হুঙ্কার, “আমাকে গুন্ডাগিরি দেখাবেননা যোগীজি। আপনি বড় সন্ন্যাসী সাজেন। সন্ন্যাসী তাঁরাই, যাঁদের সম্মান থাকে। আপনি সন্ন্যাসী নন। আপনি সন্ন্যাসীদের অপমান করছেন। ” “আপ যোগী নেহি হ্যায়, আপ ভোগী হ্যায়!”
এমন স্পষ্ট উচ্চারণ শুনে উত্তরপ্রদেশের মানুষের গায়ে শিহরণ খেলেছে বৈকি। অখিলেশ যাদব পর্যন্ত নিজের উচ্ছাস চেপে রাখতে পারছিলেননা, মঞ্চে তাঁর সেই ছবি ধরা পড়েছে।
উত্তরপ্রদেশের করোনা পরিস্থিতি, গঙ্গায় লাশ ভাসানোর প্রসঙ্গ, লখিমপুর খেরিতে চাষীদের মৃত্যু সহ একাধিক বিষয় মমতার বক্তব্যে উঠে আসে। এমনকি সাম্প্রতিক রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গেও মোদীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, “ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে, আর মোদীজি এখানে মিটিং করছেন!”
এরপর অখিলেশ যাদবকে জনসাধারণের ঘরের ছেলে আখ্যা দিয়ে তাঁকে জেতানোর আবেদন জানান স্থানীয় মানুষের কাছে। তাঁর বার্তা, “উত্তরপ্রদেশে বিজেপি হারলে ২০২৪-এ সারা দেশ থেকে বিজেপি মুছে যাবে।”